ছবি : মেসেঞ্জার
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান-১ আসনের সাংসদ সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই এ্যাড. মীনহাদুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এনে চলমান নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপুণ ও সুষ্ঠ করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
রোববার (৫ মে) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সোনাতলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ জাকির হোসেন জাকির এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলে আমি নির্বাচন থেকে সরে যাবো।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সোনাতলা উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ এর মটরসাইকেল মার্কার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। অত্যন্ত দু:খ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা সদয় অবগতির জন্য পেশ করতেছি। আমি দীর্ঘ ৫ বছর আপনাদের সেবা করার উদ্দেশ্যে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করি।
ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করার সময়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের অসহযোগীতা, দূর্নীতি, বিভিন্ন রকমের অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও আত্মীয়করণ ইত্যাদি কারণে মনমালিন্য হওয়ায় উপজেলা পরিষদ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে সম্পূর্ণ রূপে অবহেলিত করে। উপজেলার চেয়ারম্যান মাননীয় সংসদ সদস্যের ভাই হওয়ার কারণে আমাকে সকল প্রকার সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে।
দীর্ঘ ৫ বছর আমি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আপনাদের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারিনি। আপনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে আমি এবারের উপজেলা নির্বাচনে নিজেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষনা করি।
কিন্তু সংসদ সদস্য মহোদয়ের প্রত্যক্ষ মদদে তার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লীটন সোনাতলা থানার বিভিন্ন এলাকা হতে চিহ্নিত কিছু মাস্তান, মাদকসেবী, পেটুয়া বাহিনী ও কিছু টোকাই শ্রেণীর লোকজনদের কে নিয়ে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে এবং এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তিনি সোনাতলা থানার সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন।
আমি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কারণে তিনি তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার নির্বাচনের সমগ্র কর্মকান্ডে বাঁধা প্রদান করতে থাকে। গত ৩১ মার্চে আমার কর্মীরা বালুয়াহাট বাজারে, আমার ঈদের শুভেচ্ছা পোষ্টার ও ব্যানার লাগাতে গেলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার কর্মীদের মারধর করে ব্যানার পোষ্টার কেড়ে নিয়ে বালুয়াহাট থেকে তাড়িয়ে দেয়।
গত ৩০ মার্চে দিগদাইড় ইউয়িনের চাড়ালকান্দীতে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে তাতে অগ্নিসংযোগ করে। গত ৩ মে মধ্য দিঘলকান্দী গ্রামে আমার উঠান বৈঠকে বাধা প্রদান করে, বৈঠক ভন্ডুল করে দেয় এবং আমার কর্মী সমর্থক ও প্রিয় ভোটারবৃন্দকে নানা ভাবে হুমকী-ধামকী ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করে প্রকাশ্যে আনারস মার্কায় ভোট প্রদানের জন্য শাসিয়ে যায়।
আমি নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল করার পর থেকে আমার একমাত্র প্রতিপক্ষ আমাকে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তাব দেয়। আমি তাতে সম্মত না হওয়াই তারা আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী ও হুমকী-ধামকী দিতে থাকে। আমি তাদের প্রত্যেকটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, নির্বাচনী আচরণ ভঙ্গ ও সকল প্রকারের অনিয়মের অভিযোগ ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে লিখিত ও মৌখিক ভাবে একাধিকবার অবহিত করি।
জাকির হোসেন আরও বলেন, আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ১৯৮৭ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতি পর্দাপন করি। এর ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, দু'দুবারের মতো উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক, দু'বারের মতো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে অত্যন্ত প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠার সাথে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করি।
আপনারা সব সময় আমাকে অসীম সাহস যুগিয়েছেন এবং আমাকে আকুন্ঠ সমর্থন দিয়েছেন, আমি আপনাদের এই ভালোবাসাকে শ্রদ্ধার সাথে সন্মান করি। আমি মীনহাদুজ্জামান লিটনের প্রত্যেকটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, প্রত্যেকটি হুমকী ধামকীর সমুচিত জবাব দিতে সক্ষম। কিন্তু আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি। তাছাড়া আমার প্রাণ প্রিয় সোনাতলাবার্স) খুবই শান্তি প্রিয়, কোন রকম সংঘাতে জড়াতে চাই না।
তাই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং বড় রকমের সংঘাত এড়ানোর লক্ষ্যে, আমি আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে সুষ্ঠ নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং সাধারণ ভোটার মাঝে থেকে ভীতি দূরীকরণ সহ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাস নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ঘোষিত না হলে আমি নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য হব।
মেসেঞ্জার/আলমগীর/আপেল