ঢাকা,  রোববার
১৯ মে ২০২৪

The Daily Messenger

বাড়িতে স্বল্প পরিসরে মাছ চাষে তিনগুণ লাভে খুশি মাছচাষীরা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ৫ মে ২০২৪

আপডেট: ১৯:১৮, ৫ মে ২০২৪

বাড়িতে স্বল্প পরিসরে মাছ চাষে তিনগুণ লাভে খুশি মাছচাষীরা

ছবি : মেসেঞ্জার

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ছাটমল্লিক বেগ গ্রামে বাড়ীর ভিতর স্বল্প পরিসরে ভিয়েতনামি কৈ মাছ চাষ করে তিনগুণ লাভ করে খুশি মাছচাষী ওসমান গনি।

পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ওসমান গনি বাড়ীর ভিতরে অর্ধশতক জায়গায় একটি গোলাকার ট্যাংক তৈরী করেছেন। সেখানে ৮ হাজার টাকায় ৮ হাজার ভিয়েতনাম কৈ-মাছের পোনা ছেড়েছেন। ৫ মাসে সেই কৈ মাছ বিক্রি করেছেন ৪০ হাজার টাকায়। আরো ৮০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারবেন তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়ীর ভিতর রান্নাঘরের পিছনে মাছচাষী ওসমান গনি সিমেন্ট ও ইট দিয়ে ১৬ ফিট ব্যাসের একটি গোলাকার ট্যাংক তৈরী করেছেন। যার উচ্চতা ৪ ফিট। পানি ধারণ ক্ষমতা ২৩ হাজার লিটার। ট্যাংকে দুই থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত পানি রাখা হয়েছে। পানি সরবরাহের জন্য একটি পানির পাম্প কিনেছেন।

এছাড়াও পানি স্প্রে করার জন্য দু‘দিকে দুটি শাওয়ার বসিয়েছেন। এতে সবমিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ৬৮ হাজার টাকা।

মাছচাষী ওসমান গনি জানান, আমি আরডিআরএস’র সহযোগিতায় গত ৮ অক্টোবর রংপুর থেকে ৮ হাজার টাকায় ৮ হাজার ভিয়েতনাম কৈ মাছের পোনা সংগ্রহ করি। মাছ কেনার পর প্রচন্ড শীত থাকায় তিন মাস মাছ বৃদ্ধিই হয়নি।

কিন্তু শীত নেমে যাবার পর গত ৫ মাসে দ্রুত বাড়তে থাকে পোনাগুলো। আমি আজ ২০০ কৈ উত্তোলন করেছি। বাজারে ২০০ থেকে ২২০টাকা কেজি দরে মাছগুলো বিক্রি করতে পারবো। প্রথমবার আমার অল্প লাভ হলেও পরবর্তী বছর থেকে আমি মাছ বিক্রি করে তিনগুণ করে লাভ করতে পারবো।

আমি কৃষিজমিতে কাজের ফাঁকে সামান্য সময় দিয়ে মাছ চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছি। এতে জায়গা কম লাগে বেশি সময় দিতে হয় না। সময়মতো মাছের খাবার দিলেই হয়। এ কাজে আমার স্ত্রী ও ছেলে সহযোগিতা করছে।

ওসমান গণির অনার্স পড়ুয়া ছেলে রাকিবুল হাসান জানায়, পড়াশুনা ও কলেজ যাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে আমি বাবাকে সাহায্য করছি। আমার এখন ভীষণ ভালো লাগছে। এখন আমি সকালে এবং বিকেলে ট্যাংকের পাশে চেয়ার টেবিল নিয়ে পড়তে বসি। যখন পানিতে মাছের টুক টুক শব্দ হয়, তখন আমার ভীষণ ভালো লাগে।

বাবা না থাকলে আমি অথবা আমার মা মাছকে পিলেট ফিড খেতে দিই। প্রথম সিজনে আমরা ৪ বস্তা ফিড মাছকে খেতে দিয়েছি। গড়ে ৪ বস্তায় খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকা।

আরডিআরএস’র সহকারি টেকনিক্যাল অফিসার মানিক চন্দ্র রায় জানান, ট্যাংকে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষের ফলে কিছু সমস্যা হয়ে থাকে। মূলত: মাছের অক্সিজেন, পিএস, মাছের এ্যামোনিয়ার ফলে মাছ মারাও যেতে পারে।

চাষীরা যাতে ক্ষতির সম্মুক্ষিণ না হয় এজন্য আমরা দু’সপ্তাহ পরপর এগুলো পরীক্ষা করে থাকি। কোন সমস্যা হলে সমাধান করে দেই।

রাজারহাট আরডিআরএস’র টেকনিক্যাল ফিসারিজ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, রাজারহাটে ৪টি ট্যাংকে পরীক্ষামূলকভাবে ভিয়েতনাম কৈ-মাছ চাষ করা হচ্ছে। পরিবারে অন্যান্য কাজের ফাঁকে বাড়তি আয়ে উদ্ভুদ্ধ করতে এই প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে। এতে তারা বেশ লাভবান হবেন।

রাজারহাট উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আরিফুল আলম জানান, পরিবারে প্রোটিন ও পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে মৎস চাষ একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। ট্যাংকে কৈ মাছ চাষের ফলে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উদ্যোক্তা তৈরী হবে এবং মাছ বিক্রি করে তারা লাভবান হতে পারবেন।

মেসেঞ্জার/রাব্বানী/আপেল

dwl

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768