ঢাকা,  সোমবার
২০ মে ২০২৪

The Daily Messenger

বরগুনায় গণধর্ষণ মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ আদালতের

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৪০, ৮ মে ২০২৪

আপডেট: ১৯:৫৭, ৮ মে ২০২৪

বরগুনায় গণধর্ষণ মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ আদালতের

ছবি : মেসেঞ্জার

বরগুনার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা হয়েছে।

বুধবার (৮ মে) বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের শিকার ঐ কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

আদালতের বিচারক মোঃ মশিউর রহমান খান মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তপুর্বক সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় জেলার সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে মামলার বাদীর কন্যার মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান বাচ্চু মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।

কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকে। ধর্ষণের শিকার ঐ নারী বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে করবে বলে স্ট্যাম্পে লিখিত দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দৈহিকভাবে মিলিত হয় এবং গোপনে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে।

ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মামলার ২ নং আসামি পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন। চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং তিনিও মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারন করে রাখেন।

পরে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওই কন্যাকে ব্ল্যাক মেইল করেন এবং তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করে। তার কথা না শুনলে তাকে জীবন নাশের হুমকি দেন।

নিরুপায় হয়ে ধর্ষণের শিকার ঐ নারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সঙ্গে দৈনিক সম্পর্কে বাধ্য হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও ওই কন্যাকে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে দাবী করেন মামলার বাদী।

তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করবে বলে হুমকি দেয়। এমন খবর পেয়ে তিন চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিলে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর বিরুদ্ধে উল্টো পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দেয়। ওই মামলায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে ওই মামলায় ধর্ষণের শিকার ঐ নারী জেল হাজতে রয়েছে।

এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ঐ নারীর বাবা বুধবার বরগুনা নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পচাঁকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়ের করেন।

আদালতের বিচারক মোঃ মশিউর রহমান খান মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।

তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমি ও অন্য দুই চেয়ারম্যানের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবো।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি মোঃ আনিচুর রহমান মিলন বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

মেসেঞ্জার/হিমাদ্রি/আপেল

Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768