ছবি : মেসেঞ্জার
দেশ ডিজিটাল হয়েছে, সেবার মানও বেড়েছে সব ক্ষেত্রেই। এসেছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। বর্তমান সময়ে তথ্য আদান প্রদান থেকে শুরু করে বেশিরভাগ কাজ হয়ে থাকে অনলাইন মাধ্যমে। তবে লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলা পরিষদের অর্থবছরের বরাদ্দের তালিকা সহ বেশকিছু তথ্য অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
(২৫ মার্চ) লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দের তালিকা দেখা যায়। তবে ২১-২২ অর্থবছরের বরাদ্দের তালিকা থাকলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দের তালিকায় কিছুই ছিলনা।
পরে এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে উপজেলা পরিষদ সহকারী প্রোগ্রামার আইসিটি কর্মকর্তা ২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। তবে এখনো ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বরাদ্দের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি।
শুধু বরাদ্দের তালিকা নয়, তথ্য মন্ত্রনালয় ও জেলা থেকে অনুমোদন নিয়ে সাপ্তাহিক পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে পাঁচটি। তবে সেই পাঁচটি নামের তালিকায় দেখানো হচ্ছে মাত্র একটি পত্রিকা ও সম্পাদকের নাম। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পত্রিকা সম্পাদকরা।
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদের যেখানে মাসিক সভা হওয়ার কথা প্রতি মাসে সেখানে (১২ মাস) এক বছরের মধ্যে ওয়েবসাইটে তথ্য দেয়া আছে ৮ মাসের বাকি ৪ মাস সভা হয়েছে কিনা তা ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়াও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ৪ মাসের মাসিক সভার তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে প্রাক্তন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের নাম এবং সাল উল্লেখ করা হলেও ১৯৯৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কে দায়িত্বে ছিলো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সেটিও প্রকাশ করা হয়নি ওয়েবসাইটে।
এছাড়াও প্রাক্তন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নামের তালিকা ও কার্যালয়ের সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১৭-১৯ সাল পর্যন্ত। যেখানে সর্বশেষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ছিলেন জয়শ্রী রানী রায়৷ এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পেয়েছেন মোট ৭ জন তবে তাদের নাম সহ বিস্তারিত ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ছাড়কৃত বরাদ্দের অর্থ ও রাজস্ব অর্থ দ্বারা বাস্তবায়িত প্রকল্পসমূহের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের তালিকা পাওয়া গেলেও ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়াও সদর উপজেলা এনজিও, বীমা কোম্পানি সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকার ঘরে শূন্য দেখা যাচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার সম্পাদক মাসুদ রানা রাশেদ বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ এটি একটি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। যেখানে সারাদেশে ডিজিটাল ও স্মার্ট সেবার উপর নির্ভশীল সেখানে উপজেলা পরিষদের মানুষরা ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত।
এবিষয়ে সচেতন মহল সনাকের সদস্য ডা.মিলন বলেন, প্রত্যকটি উপজেলা পরিষদ ও তার অঙ্গ সংগঠন গুলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা প্রয়োজন। তবে সদর উপজেলার বরাদ্দ বাজেট সহ অনলাইন ওয়েবসাইটে হালনাগাদ না করার কারণে সাধারণ মানুষ সেই সেবা থেকে পিছিয়ে পড়েছে। সবকিছুর পিছনে কোন বিশেষ কারন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হোক।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন বলেন, হয়ত কোন তথ্যর ঘাতটি ছিলো এজন্য সহকারী প্রোগ্রামার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে পারেনি৷ আমরাও একটু ব্যস্ত ছিলাম।
লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলা সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অন্তত কয়েক ডজন অফিসের ওয়েবসাইট হালনাগাদ করা হয়নি।
এমন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ-কে তিনি বলেন, কোন কোন উপজেলা ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করা হয়নি আমাকে বললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেসেঞ্জার/আপেল
