ঢাকা,  সোমবার
২০ মে ২০২৪

The Daily Messenger

বগুড়ায় চুরির রহস্য উদঘাটন, স্বর্ণ উদ্ধার

বগুড়া ব্যুরো 

প্রকাশিত: ১৯:১০, ৯ মে ২০২৪

আপডেট: ১৯:১৩, ৯ মে ২০২৪

বগুড়ায় চুরির রহস্য উদঘাটন, স্বর্ণ উদ্ধার

ছবি : মেসেঞ্জার

বগুড়া নিউ মার্কেটে তৌফিক জুয়েলার্স থেকে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ১১০ ভরি স্বর্গ চুরি মামলার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। সে সাথে লুন্ঠিত সাড়ে ১৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার ও আন্ত:জেলা চোর দলের সক্রিয় সদস্যসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- কুমিল্লা জেলকর মুরাদনগর উপজেলার কদমতলা এলাকার জুলহাজ ওরফে ঝরুর ছেলে মুলহোতা মোঃ রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাঁচা রুবেল (২৭), নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার দেওভোগ এলাকার শ্রী নন্ত সাহার ছেলে ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহা (৩০) এবং চুরিকৃত স্বর্ণ ক্রয়কারী জুয়েলার্স মালিক কুমিল্লা দক্ষিণ সম্বর থানার কমলাপুর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ শাহাজালাল (৪৬)।

এদের নিকট থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত ১টি উদ্ধার বোল্ট কাটার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কাযালয়ে পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদোন্নতি) সুদীপ কুমার চক্রবত্তী এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সুপার আরও জানান, বগুড়া সদর থানাধীন নিউ মার্কেটের আল-তৌফিক জুয়েলার্সে গত মাসের ২০ তারিখে সকাল ৯ ঘটিকা হইতে ৯.৩০ ঘটিকার মধ্যে অভিনব কায়দায় দোকানের শাটারের তালাকেটে অজ্ঞাত চোর চোরেরা ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বগুড়া সদর থানার মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

মামলাটি আমার সার্বিক দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ স্নিগ্ধ আখতার, পিপিএম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত। এর তত্তাবধানে আতরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শরাফত ইসলাম ও বগুড়া সদর থানার একটি চৌকস টিম তথা প্রযুক্তির সহায়তায় ১ মে অভিযান শুরু করে।

৬ দিন ব্যাপী গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম জেলায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রামের পটিয়া থানা এলাকা হইতে বর্ণিত মামলার তদন্তে প্রাপ্ত অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহাকে চলতি মাসের ৬ তারিখে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সাথে জড়িত মূল অভিযুক্ত কবেলকে একই দিনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় আকবরশাহ থানার ফিরোজশাহ কলোনী গ্রুপাত্তা হইতে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযুক্ত রুবেলকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়- সে বর্নিত ভূষি ঘটনার বিভিন্ন ধরনের ১৭ (সতের ভরি) স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার কুমিল্লা সদর দক্ষিন থানাধীন সোয়াগাজী বাজারের বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সের শাহাজালাল এর কাছে বিক্রি করেছে। তার প্রদত্ত তথার ভিত্তিতে ৭ তারিখে কুমিল্লা সোয়াগাড়ী বাজারে বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে অভিযান করে অভিযুক্ত শাহাজালালকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার ১৭ ভরি ৮ আনা ০৪ রতি উদ্ধার করা হয়।

অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নকে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেখানো মতে চুরি সংঘটন কাজে ব্যবহৃত তালা কাঁটার যন্ত্র বোল্ট কাঁটার বগুড়া সদর বানাধীন ছিলিমপুর মৌজাছ ঢাকা রংপুর মহা সড়কের পূর্ব পার্শ্বে বগুড়া মৃত্তিকা অফিস সংলগ্ন ড্রেজঙ্গলের ভিতর হতে উদ্ধার করা হয়।

অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহা জানায় যে, উক্ত চুরিতে তার দায়িত্ব ছিল স্বর্ণের দোকানের তালা কাটার। সে তার দায়িত্ব পালন করে পালিয়ে যাওয়ার সময় উল্লেখিত স্থানে বোল্ড কাটারটি ফেলে যায়। অভিযুক্ত জবেল ও নয়নকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যে, করেল এর নেতৃতে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নসহ ১২  জন মোট ১৩ জন বর্ণিত চুরির ঘটনায় অংশগ্রহন করে। চুরি করার সময়ে প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে।

কোন সদস্য কাপড় জাতীয় কিছু দিয়ে ঘটনাস্থল আড়াল করে। কোন সদস্য কাঁটার বহন করে। কোন সদস্য দোকানের শার্টারের তালা কাটে।  ২ জন সদসা দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল ব্যাগে ভর্তি করে। কোন সদসা রাস্তায় অবস্থায় করে লোকজনকে অনুসরন করে। চুরির কাজ সম্পন্ন হলে কোন সদস্য চুরিকৃত মালামাল বহন করে। বর্ননা ঘটনায় তারা চুরির কাজ সম্পন্ন করে সাতমাথা তিনমাথা হয়ে বগুড়া নাটোর মহাসড়ক ব্যবহার করে সিএমজি এবং বাসে উঠে তাদের দলের প্রধানের নির্দেশনায় নাটোর জেলার মাদ্রাসা মোড়ে পুনরায় একত্রিত হইয়া কুমিল্লা চলে যায়।

তারপর নিজেদের মধ্যে চুরি মালামাল ভাগ করে নেয়। গ্রেফতার এড়াতে অভিযুক্তরা প্রত্যেকে বিভিন্ন এ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। অভিযুক্তরা সকলেই ভাসমান ভারা তাদের নিজস্ব ঠিকানায় বসবাস করে না। তারা কোন চুরি ঘটনা সংঘটনের পর তাদের বাসা পরিবর্তন করে। অভিযুক্তরা আন্তঃজেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। সাধারনত মোবাইল, বিকাশ এবং জর্নের দোকন চুরি করে।

গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তরা আরো জানায় যে, যেকোন জেলায় চুরি করার পূর্বে তারা উক্ত এলাকায় এসে আগেই চুরির স্থান রেকি করে যায় এবং সাধারণত তারা সরকারী ছুটির দিনে চুরি করে।

এসপি আরও জানান, অভিযুক্তদের পিসিপিআর যাচাই করে জানা যায় যে গ্রেফতারকৃত ১ নং আসামী মোঃ রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাঁটা রুবেল এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ১২ টি, ২ নং আসামী ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহার বিরুদ্ধে ৬ টি, ৩ নং আসামী মোঃ শাহাজালাল এর বিরুদ্ধে ২টি চুরি মামলা রয়েছে। এ মামলার অন্যান্য পলাতক অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান চলমান আছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন,  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ,  সরাফত ইসলাম, সুমন রঞ্জন সরকার, বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাইহান ওয়ালিউল্লাহ, পরিদর্শক তদন্ত শাহিনুজ্জামান প্রমুখ।

মেসেঞ্জার/আলমগীর/আপেল

Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768