ঢাকা,  শনিবার
১৮ মে ২০২৪

The Daily Messenger

একই ফ্ল্যাটের একাধিক দলিল বানিয়ে শত কোটি টাকা প্রতারণা চক্র গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:০৫, ৪ মে ২০২৪

আপডেট: ২০:০৮, ৪ মে ২০২৪

একই ফ্ল্যাটের একাধিক দলিল বানিয়ে শত কোটি টাকা প্রতারণা চক্র গ্রেপ্তার

জালিয়াতি চক্রের ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। ছবি: সিআইডি

এক ব্যক্তি তার ছয়টি সক্রিয় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), একাধিক টিন নম্বর এবং একটি ফ্ল্যাটের ছয়টি দলিল, প্রতিটি দলিল দিয়ে পাঁচটি ব্যাংকসহ ছয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছেন প্রায় শত কোটি টাকা। এই জালিয়াতিতে তাকে সহযোগিতা করেছেন বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং ভূমি ও নিবন্ধন অফিসের বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। অবশেষে এই চক্রের ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, জয়নালের কাছ থেকে একজন ব্যক্তি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাট কেনেন। কেনার পর জানতে পারেন ফ্ল্যাটটি বিভিন্ন ব্যাংকে মর্টগেজ রেখে কয়েক কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় গত ডিসেম্বরে একটি মামলা করেন তিনি। মামলাটি সিআইডি তদন্ত শুরু করে। গত এপ্রিলে জয়নাল আবেদিন ওরফে ইদ্রিসসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। বাকি তিনজন হলেন—জয়নালের সহযোগী রকিবুল ইসলাম খান, আলিফ হাসান ও পল্লব দাস। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার এনআরবিসি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী, ভূমি অফিসের কর্মচারীসহ আরও ৮ জনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জয়নাল আবেদিন ইদ্রিসের প্রধান সহযোগী মো. রাকিব হোসেন, জয়নালের ভায়রা কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, জাল কাগজপত্র ও এনআইডি প্রস্তুতকারক ও ইসির কর্মচারী মো. লিটন মাহমুদ, ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল প্রস্তুতকারক হাবিবুর রহমান মিঠু, এনআরবিসি কর্মকর্তা হিরু মোল্যা, আব্দুস সাত্তার ও সৈয়দ তারেক আলী।

তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিলমোহর, একই ব্যক্তির একাধিক এনআইডি ও টিন নম্বর, ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডসহ নগদ ৩ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

সিআইডি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, এক ব্যক্তির ছয়টি সক্রিয় জাতীয় পরিচয়পত্র, একাধিক টিন নম্বর, একই ফ্ল্যাটের ছয়টি মূল দলিল। এই এনআইডি ও টিন ব্যবহার করে চক্রের সদস্যরা একই ফ্ল্যাট বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মর্টগেজ রেখে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশন, ভূমি অফিস ও ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত। চক্রের মূল হোতা জয়নাল আবেদীন ইদ্রিস।

জয়নাল আবেদীন এক সময় মিরপুর কো–অপারেটিভ মার্কেটে ইমিটেশনের গয়না বিক্রি করতেন। ২০১৭ সাল থেকে মিরপুরের শহিদুল ইসলাম সবুজ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মিলে তিনি জালিয়াতি শুরু করেন। তাঁর জালিয়াতির শিকার হয়ে ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় পথে বসেছেন অনেক মানুষ। জালিয়াতি করে ঢাকার বসুন্ধরায় সাততলা বাড়ি, বিভিন্ন এলাকায় ১১টি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। নিজে প্রতিষ্ঠা করেছেন রুমানা জুয়েলার্স, নীড় এস্টেট প্রোপার্টিজ লিমিটেড, স্নেহা এন্টারপ্রাইজ, ইআর ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া চক্রটির এখনো ১৩ জন পলাতক রয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচটি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীও রয়েছেন।

মেসেঞ্জার/হাওলাদার

dwl

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768