ঢাকা,  রোববার
১৯ মে ২০২৪

The Daily Messenger

ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তাল

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তাল

গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘গাজা সংহতি শিবির’ নামে একটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের বিক্ষোভের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সশরীরে ক্লাস বাতিল করা হয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বিক্ষোভকারীদের আটক করা হচ্ছে। গত সোমবার (২২ এপ্রিল) বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভকারীদের একটি দল গাজার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। দ্রুতই বিক্ষোভের উত্তেজনা ইয়েল, এমআইটি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে।

কলাম্বিয়ার বিক্ষোভকারীরা নিউইয়র্কের মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সংস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আহ্বান জানায়। দিনব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যে অনেক ইহুদি শিক্ষার্থীভীতিপ্রদর্শন ইহুদি বিদ্বেষেরঅভিযোগ জানিয়েছে।

গতকাল সোমবার সশরীরে ক্লাসের পরিবর্তে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত শফিক স্কুল কমিউনিটির কাছে লেখা এক খোলা চিঠিতে পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘গত কয়েকদিনে আমাদের ক্যাম্পাসে ভয়ভীতি প্রদর্শন হয়রানিমূলক আচরণের অনেক ঘটনা ঘটেছে।

চিঠিতে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষকে আঘাত ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহৃত অন্য যে কোনো ভাষার মতো ইহুদি বিদ্বেষপূর্ণ ভাষা, অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উত্তেজনা প্রশমিত করতে এবং আমাদের সকলকে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করার সুযোগ দিতে, আমি সোমবার সমস্ত ক্লাস ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেসরকারি ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে আনার পরে গত সপ্তাহে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পদক্ষেপের কারণে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

সমাজকর্ম বিভাগের গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থী মিমি ইলিয়াস গতকাল সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যতক্ষণ না তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলছে এবং আমাদের দাবি শুনছে ততক্ষণ আমরা থাকব। আমরা কোনো ধরনের ইহুদিবিদ্বেষ বা ইসলামভীতি চাই না। আমরা এখানে এসেছি সবার মুক্তির জন্য।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসিকের সহযোগী অধ্যাপক জোসেফ হাওলি বলেন, পুলিশকে জড়িত করে বিশ্ববিদ্যালয় ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে, যার কারণেআমাদের ছাত্র বিক্ষোভের অংশ নয় এমন উগ্রপন্থী বিষয়ও এখানে ঢুকে পড়েছে। দমনপীড়ন শাস্তি দিয়ে কুসংস্কার এবং সাম্প্রদায়িক বিরোধ দূর করা যাবে না।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপনকারী বিক্ষোভকারীদের আটক করা শুরু করে পুলিশ। এর আগে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আচরণকেউচ্ছৃঙ্খল, বিঘ্নকারী, এবং বিরোধীবলে মন্তব্য করে।

এমআইটি, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইয়েলেও বিক্ষোভ হয়েছে। এই ক্যাম্পাসগুলোতে ছত্রভঙ্গ করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার পরে গতকাল সোমবার কমপক্ষে ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইভি লীগ বলে, ‘পুরো ইয়েল পরিবারের নিরাপত্তা সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে যারা প্লাজা ছেড়ে যাবেন না তাদের গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

গতকাল সোমবার হার্ভার্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনি সংহতি কমিটিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন বলে ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছে ছাত্র সংগঠনটি।

সংগঠনটিকে দেওয়া এক ইমেইল বার্তার বরাত দিয়ে শিক্ষার্থীদের পত্রিকা হার্ভার্ড ক্রিমসন জানায়, গত সপ্তাহে অনুমোদিত বিক্ষোভের পরে তাদের বাকি মেয়াদের জন্যসমস্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ করারনির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

গত অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং ওই হামলার পর গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বর্বর অভিযানের কারণে গাজায় সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনইহুদিবিদ্বেষপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশের তীব্র নিন্দা করেছেন।

মেসেঞ্জার/হাওলাদার

dwl

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768