ঢাকা,  শনিবার
১৮ মে ২০২৪

The Daily Messenger

মিত্র দেশ ভারত ও জাপানকে জেনোফোবিক বললেন বাইডেন

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ৩ মে ২০২৪

মিত্র দেশ ভারত ও জাপানকে জেনোফোবিক বললেন বাইডেন

ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ জাপান ও ভারতকে ‘জেনোফোবিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি দেশ দুটিকে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে একই কাতারে ফেলেছেন, যারা অভিবাসী চায় না।

মূলত, বিদেশি বা অভিবাসীদের প্রতি ভীতি বা নেতিবাচক মনোভাব যারা পোষণ করে, তাদের জেনোফোবিক বলা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান জোটকে ‘অলঙ্ঘনীয়’ বলে অভিহিত করার কয়েক সপ্তাহ পরেই জাপানের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক মন্তব্যটি করলেন বাইডেন।

অন্যদিকে, ভারতের মানবাধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবেই বিবেচনা করে।

জাপান ও ভারত সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ মন্তব্য সম্পর্কে হোয়াইট হাউস বলেছে, জো বাইডেন কোনো দেশের প্রতিই আক্রমণাত্মক কিছু বলেননি।

বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচনী প্রচারণা তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে এশিয়ান-আমেরিকানদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাইডেন বলেছিলেন, নভেম্বরের আসন্ন মার্কিন নির্বাচনের বিষয়বস্তু হবে স্বাধীনতা, আমেরিকা এবং গণতন্ত্র।

এর কারণ প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, ‘কেন? কারণ আমরা অভিবাসীদের স্বাগত জানাই। আপনারা ভাবুন যে চীনের অর্থনীতি কেন এত খারাপভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে? কেন জাপানের সমস্যা হচ্ছে? কেন রাশিয়া? কেন ভারত? কারণ তারা জেনোফোবিক। তারা অভিবাসী চায় না।’

এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে বিবিসি যুক্তরাষ্ট্রে জাপান, ভারত, চীন ও রাশিয়ার দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পায়নি। তবে বাইডেনের এই মন্তব্য সমালোচনা কুড়োচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রেই।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক মার্কিন উপসহকারী প্রতিরক্ষাসচিব এলব্রিজ কোলবি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে লিখেছেন, জাপান ও ভারত যুক্তরাষ্ট্রের দুটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

তিনি বলেন, ‘তাদের ব্যাপারে আমাদের সম্মানের সঙ্গে কথা বলা উচিত, তারা এই সম্মানের প্রাপ্য। আমাদের মিত্রদের প্রতি সংকীর্ণ প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করা হবে প্রভুত্বসুলভ ও বোকামি।’

জাপান, ভারত ও চীনে তুলনামূলকভাবে বিদেশি বংশোদ্ভূত কর্মী কম থাকলেও রাশিয়ার অবস্থা তেমন নয়। দেশটি অনেকাংশেই অভিবাসীদের শ্রমের ওপর নির্ভরশীল। মধ্য এশিয়া থেকে বড় সংখ্যক শ্রমিক যায় রাশিয়ায়।

জাপান ও চীনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন কিছুটা মন্থর। অন্যদিকে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় বেশ কিছু আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত বছর রাশিয়া সামরিকীকরণ অর্থনীতি কিছুটা পুনরুদ্ধার করেছে।

আর ভারত স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যকে টপকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।

বাইডেন যে অবমাননাকর অর্থে কিছু বলেননি তা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কারবি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের মিত্র এবং অংশীদারেরা বাস্তবিক অর্থে ভালোভাবেই জানেন যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন কীভাবে তাদের বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতাকে মূল্যায়ন করেন।

তারা বুঝতে পারেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন জোট এবং অংশীদারত্বের ধারণাকে কতটা মূল্য দেন।’

ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সদানন্দ ধুমে বিবিসিকে বলেছেন, ভারতে এখন জাতীয়তাবাদী চেতনার উত্থান ঘটেছে।

সেখানে বাইডেনের মন্তব্যকে ভালোভাবে দেখা হবে না। তিনি বলেন, ‘ভারতীয়দের একটি অংশের মধ্যে এ ধারণাটি সৃষ্টি হতে পারে যে বাইডেন ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ নন। চীনের মতো স্বৈরাচারী দেশের সঙ্গে ভারতকে এক কাতারে ফেলাকে ভারতীয়রা সহজভাবে গ্রহণ করবে না।’

এপ্রিলের শেষ দিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভারতে উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পাওয়া গেছে।

এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়ায় ভারত প্রতিবেদনটির সমালোচনা করে বলেছিল, প্রতিবেদনটি গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং ভারতের প্রতি খুবই দুর্বল বোঝাপড়াই সেখানে প্রতিফলিত হয়েছে।

তবে সদানন্দ ধুমের মতে, বাইডেনের এই মন্তব্য দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্ককে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে, তেমন আশঙ্কা নেই। এটি কেবল চায়ের কাপে ঝড়ই তুলবে।

মেসেঞ্জার/তারেক

dwl

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 770