ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪

The Daily Messenger

ঢাক-ঢোল আর সানাই বাজিয়ে বিয়ে হচ্ছে বট-পাকুড়ের

দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ১৩ মার্চ ২০২৪

আপডেট: ১৮:০৭, ১৩ মার্চ ২০২৪

ঢাক-ঢোল আর সানাই বাজিয়ে বিয়ে হচ্ছে বট-পাকুড়ের

ছবি : মেসেঞ্জার

সকাল থেকে বাজানো হচ্ছে ঢাক-ঢোল আর সানাইয়ের বাঁশি। পাত্র-পাত্রী পক্ষ দিচ্ছেন উলুধ্বনি। পুরোহিত পাঠ করছেন মন্ত্র। পাত্র-পাত্রীকে এক পলক দেখার জন্য ভীড় করছেন অনেকেই। আয়োজনে নেই কোন কিছুর কমতি। কিন্তু এটি কোন মানুষের বিয়ে নয়, বিয়েটি আয়োজন করা হয়েছে বট আর পাকুড়ের।

বুধবার (১৩ মার্চ) দিনাজপুর শহরের রাজবাড়ী হিরাবাগানের মাঠে এই ব্যতিক্রমধর্মী বিয়ে আয়োজন করা হয়।

সকাল থেকে শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। বটপাকুড়ের বিয়েতে বটগাছকে কনে আর পাকুড় গাছকে বর হিসেবে সাজানো হয়। বর ও কনেকে এক পলক দেখার জন্য ভীড় করতে থাকে আশপাশের মানুষরা। অনেকে সাজগোজ করে এসেছে বিয়ে বাড়ীতে।

সকাল থেকে নানান আনুষ্ঠানিকতা করতে থাকে আগতরা। ব্যতিক্রমধর্মী এই বিয়ে দেখে অনেকে খুশি। প্রায় ৩০০ মানুষের আয়োজন করা হয়েছে বর ও কনের পরিবার জানিয়েছে।

বিয়েতে বরের বাবা হিসেবে জগদীশ চন্দ্র মোহন ও কনের বাবা হিসেবে কন্যাদান করেন কালু চন্দ্র মোহন্ত। বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন পুরোহিত নারায়ন চন্দ্র সাহা।

স্থানীয় বাসিন্দা সমাপ্তি অধিকারী বলেন, “সাধারণত বট আর পাকুড়ের বিয়ে কোন জায়গা দেখা যায় না। এই প্রথম বট আর পাকুড়ের বিয়ে দেখলাম। খুব ভালো লাগলো। মানুষ যেভাবে বিয়ে করে ঠিক সেভাবে বট আর পাকুড়ের বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো।”

দর্শনার্থী চন্দ্রনা মোহন্ত বলেন, “বট-পাকুড়ের বিয়ে দিলে আমাদের ধর্মীয়ভাবেই একটা পুণ্য লাভ হয়। অনেকেই আবার ছেলে বা মেয়ে সন্তান লাভের আশায় এই বিয়ে দেয়। অনেক আগে থেকে এই বিয়ের প্রথা চলে আসছে। আজ খুব আনন্দে আমরা বিয়ে অনুষ্ঠান করেছি।”

দর্শনার্থী ইশ্বিতা কুন্ডু রিতা বলেন, “ছোটবেলা থেকে বট-পাকুড়ের বিয়ে দেখার অনেক ইচ্ছে ছিল। অনেকবার শুনেছি বট-পাকুড়ের বিয়ের কথা। কিন্তু এই প্রথম নিজ চোখে বট-পাকুড়ের বিয়ে দেখলাম। বিয়েতে অনেকের আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা হলো। সবাই মিলে অনেক আনন্দ করেছি।”

বরের বাবা জগদীশ দেবনাথ বলেন, “আমরা ৪টি মেয়ে আছে। কিন্তু একটাও ছেলে নাই। তাই আমি এই বিয়েতে বরের বাবা হয়েছি। এর মাধ্যমে আমাদের সব মঙ্গল হবে। আমাদের পরিবারের বিপদ-আপদ দূর হবে।”

কথা হলে কন্যাদান করা কালু চন্দ্র মোহন বলেন, “আমার কোন কন্যা নেই। আমি এ যাবত শুধু শুনেই আসছি যে বট আর পাকুড় গাছের বিয়ের কথা। কোনো দিনও সেই বিয়ে দেখিনি। আজকে নিজেই কন্যার বাবা হিসেবে বটগাছকে সম্প্রদান করছি। সনাতন রীতিনীতি মেনেই এই বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

বিয়ের পুরোহিত নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বট-পাকুড়ের বিয়ে দিলে পরিবারের অমঙ্গল দূর হয়। তাদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের কোনো অভাব বা দুঃখ-কষ্ট তাদের জীবনে আসবে না। তাই আজকে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে তাদের পরিবারের অমঙ্গল দূর হয়ে যাবে আমি মনে করি।”

মেসেঞ্জার/কুরবান/আপেল

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700