ছবি : ডেইলি মেসেঞ্জার
আলোচিত কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা খারিজের প্রতিবাদে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে গণবিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। একই সাথে বিচারের নামে প্রহসনে লিপ্ত কুচক্রীদের কুশপুত্তলিকাও দাহ করা হয়।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক বনানি বনবিহার গেইট থেকে একটি গণবিক্ষোভ মিছিল বের করে সাজেকের প্রধান সড়ক হয়ে উজোবাজারে আয়োজিত সমাবেশে গণবিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়। এতে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে। গণবিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেছে দুই নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখা।
সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক বিশাখা চাকমার সভাপতিত্বে ও সদস্য অপর্ণা চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি নিউটন চাকমা, সাজেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি অমিতা চকামা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য অমিত চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতন, খুন, গুম অপহরণ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় ‘৯৬ সালে নিউ লাল্যাঘোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করা হয়। কিন্তু এখনো আমরা এ অপহরণ ঘটনার সুবিচার পাইনি। বরং আদালত কর্তৃক মামলা খারিজ করে দিয়ে চিহ্নিত অপহরণকারী অপরাধী ও তার গংদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। আমরা এই বিচার মানি না, মানবো না। দেশের যে আইন মানুষকে হয়রানি করে সেই আইন আমরা মানি না।
বক্তারা আরো বলেন, কল্পনা অপহরণ ঘটনাটি অনেক বছর হয়েছে। এ ঘটনা ইতিহাস হয়ে থাকবে। ঘটনাটি সবাইকে মনে রাখতে হবে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে ডজনের অধিক গণহত্যা চালানো হয়েছে, অসংখ্য মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। যে রাষ্ট্র পিতাকে অসহায় করে, সন্তানকে অসহায় করে সে কেমন রাষ্ট্র প্রশ্ন রাখতে চাই।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মামলার বাদী কল্পনা চাকমার ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা সুস্পষ্টভাবে অপরাধীদের নামে মামলা দায়ের করলেও দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে মামলা ঝুলিয়ে রেখে ৩৮ জন তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করেন। শেষ পর্যন্ত ৩৯তম কর্তকর্তা রাঙামাটি পুলিশ সুপার তারিকুল হাসান অপহরণকারীদের চিহ্নিত না করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। তার বিরুদ্ধে বাদী কালিন্দী কুমার চাকমার নারাজি আবেদনের ওপর চলমান শুনানিতে গত ২৩ এপ্রিল রাঙামাটি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা বেগন মুক্তা মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। এই মামলা খারিজ করে দেয়ার মাধ্যমে প্রমাণ হয় এই দেশের সরকার, শাসকগোষ্ঠি পাহাড়ি জনগণকে শাসন-শোষণ ও বিচারহীনতার মাধ্যমে পদানত রাখতে চায়।
মেসেঞ্জার/সজিব