ঢাকা,  শনিবার
১৮ মে ২০২৪

The Daily Messenger

চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের ভবন থেকে পড়ে রোগীর মৃত্যু

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ৪ মে ২০২৪

আপডেট: ২০:৪৮, ৪ মে ২০২৪

চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের ভবন থেকে পড়ে রোগীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী হাসপাতালের ১২ তলা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে হাসপাতালের ১২ তলায় মেডিসিন বিভাগের পাশের বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণ কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া রোগীর নাম জিল্লুর রহমান (৭০)। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া এলাকার কাসেম আলীর ছেলে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, একজন রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় পড়ে গিয়ে আহত হয়ে মারা গেছেন। এ ঘটনা তদন্তের ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রধান হলেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান রুবিনা ইয়াসমিন। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তবে কীভাবে ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, আপনি হাসপাতালের আরপি ডা. কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

পরে ডা. কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জিল্লুর রহমান স্ট্রোকজনিত কারণে গত ২ মে রাত পৌনে ৮টার দিকে হাসপাতালের ১২ তলায় মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হন। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় আমরা তার কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে পারিনি। রোগীটি গরিব হওয়ায় তেমন গুরুত্ব পায়নি।

তিনি আরও জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই ওয়ার্ডের পাশে ছোট একটি কক্ষ রয়েছে, বিদ্যুতের লাইন রয়েছে সেখানে। সে কক্ষের একপাশে এক ফুট পরিমাণ ফাঁকা রয়েছে। জিল্লুর রহমান সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন। সেখানে তার স্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে কথা হচ্ছিল। এ সময় অসাবধানতাবশত তিনি ফাঁকা দিয়ে নিচে পড়ে যান। নিচে ১০ তলায় ফাঁকা জায়গাটা গ্রিল দিয়ে আটকানো ছিল। সেখানে তিনি আটকে যান। পরে ১০ তলা থেকে তাকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে তিনি ১১টার দিকে মারা যান।

শনিবার (৪ মে) বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ১০ তলায় যেখানে পড়ে গিয়ে জিল্লুর রহমান আটকে যান, সে কক্ষটি তালাবদ্ধ আছে। ভেতরে রক্তমাখা রয়েছে। কিন্তু ওপরে ১২ তলায় কক্ষটিতে তালা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ কারণে তিনি সেখানে ঢুকতে পেরেছিলেন।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স বলেন, ওই কক্ষে সাধারণত কেউ যায় না। তিনি সেখানে কেন গেলেন বুঝতে পারছি না।

অপরদিকে, এ ঘটনার জন্য একাধিক রোগী জানান, যদি কক্ষটি তালাবদ্ধ রাখা হতো বা ১০ তলার মতো গ্রিল দেওয়া থাকত, তাহলে এ ঘটনাটি ঘটত না। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের অবহেলা রয়েছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম দাবি করেন, বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগকে একাধিকবার জানালেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা ডিজাইন অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করেছি। সাধারণত হাইরাইজ ভবনে বিদ্যুতের লাইন ওঠানো-নামানোর জন্য একটি ছোট ফাঁকা রুম (ডাক রুম) রাখা হয়। এটি থাই গ্লাস দিয়ে আটকানো থাকে। এটি সব সময় তালাবদ্ধ রাখার কথা। এটির চাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে থাকে। ঘটনার সময় কেন সেটি তালাবদ্ধ ছিল না তা আমার জানা নেই।

তিনি বলেন, কক্ষটি তালাবদ্ধ থাকলে হয়ত ঘটনাটি এড়ানো যেত। তারপরেও যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে, এখন আমরা সবগুলো ফ্লোরের ওই কক্ষের ফাঁকা জায়গাগুলো গ্রিল দিয়ে আটকিয়ে দেব।

গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ রফিউল করিম জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মেসেঞ্জার/হাওলাদার

dwl

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768