অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। ফাইল ছবি
চার বছর দেখেছি-শিখেছি। পুঁজিবাজার নিয়ে যারা গেইম খেলছে তারা চিহিৃত,তাদেরকে আর সুযোগ দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ার করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পুনঃনিয়োগ প্রাপ্ত চেয়্যারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
প্রথম দফায় চারবছর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২৮ এপ্রিল রোববার, আবারো চার বছরের জন্য পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামকে।
পুনঃনিয়োগ পরবর্তী দ্য ডেইলি মেসেঞ্জারকে দেওয়া সাক্ষাতে তিনি বলেন, চার বছর দেখেছি-শিখেছি। এর মধ্যে দুই বছর করোনায় পার হয়েছে, তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ নানা ইন্স্যুতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এরপর দুই বছর অনেক কিছু দেখা হয়েছে। পুঁজিবাজারে স্বার্থে অনেক মিসিং কম্পোনেন্টগুলো পূর্ণ করা হয়েছে। এখন পুঁজিবাজার তার নিজস্ব গতিতে চলবে। বাজারে গর্ভন্যান্স নিশ্চিতে কঠোর হওয়ার পাশাপাশি বাজারে যারা গেইম করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের ছাড় দেওয়া হবে।
পরিষ্কার বার্তা দিয়ে শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, মার্কেট পার্টিসিপেন্টদের একটি অংশ দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে খেলাধূলা করে। তাদের ইচ্ছামত বাজার উঠায় আবার কখনো ফেলে দেয়। এতে ক্ষতির মধ্যে পড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিগত চার বছর দায়িত্ব পালন করে, কারা কারা বাজার নিয়ে খেলে, সেটা চিহ্নিত (আইডেনটিফাই) করা গেছে। কমিশনের ইনফোর্সমেন্ট বিভাগ সে বিষয়ে কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘শুধু তাই-ই নয়, পুঁজিবাজার বাজারের মতোই চলবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীর ইমোশনকে পুঁজি করে যারা বাজার নিয়ে খেলবে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব দিয়েছে। এটাই আমার শেষ টার্ম। এখন তো আর রি-নিউয়ালের কোনো বিষয় নেই। কাজেই মূল ফোকাস থাকবে একটি সুস্থ্য ও সুন্দর পুঁজিবাজার গড়ে তোলা।”
সেকেন্ডারি মার্কেটে বন্ড ও সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের লেনদেন চালু করা হয়েছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করছি। রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট (আরইআইটিএস) চালুর পাশাপাশি পুঁজিবাজারে যেসব অংগ-প্রতঙ্গ ছিল না, সেসব চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাজার উন্নয়নে অনেকগুলো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাজারকে এগিয়ে নেওয়ার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানীতে গর্ভন্যান্স প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তিনি বলেন, কোম্পানীতে সুশাসন না থাকলে বিনিয়োগকারীরা প্রতারিত হয়। কোম্পানীগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্টায় ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিছু কোম্পানীর মালিকরা কোম্পানী চালাতে না পারায় স্বতন্ত্র পরিচালকদের দিয়ে বোর্ড রি-কন্সট্রাকশন করা হয়েছে। কোম্পানীগুলোর উৎপাদন আবার চালু হয়েছে। বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষায় কমিশন করছে। কনফিডেন্স বিল্ড আর করতে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় ১৫ দিন আগেই গতকাল অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে থেকে এক প্রজ্ঞাপনে শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম কে চেয়্যারম্যান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ৫(৬) ধারা মোতাবেক ১৭ মে অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী চারবছর দায়িত্ব পালন করবেন।
চেয়্যারম্যান পদে শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম কে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হলেও কমিশনারদের বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। ২০২০ সালের ১৬ মে প্রথম দফায় বিএসইসির চেয়্যারম্যান পদে নিয়োগ পান তিনি। এর আগে তিনি সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের চেয়্যারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
মেসেঞ্জার/হাওলাদার