ছবি : মেসেঞ্জার
নিরাপদ সড়কের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
উক্ত মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের ৪ দফা দাবির মধ্যে জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট দাবি সমূহ তুলে ধরেন।
এসময় "আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না","শান্ত তওফিক হত্যার দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে","আর কত ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়...? " ইত্যাদি লিখা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধন করতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবিসমূহ হলো চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে ডিভাইডার স্থাপনসহ সর্বনিম্ন সংখ্যক গাছ নিধন করে চার লাইনের রাস্তা প্রশস্তকরণ।
কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত লোকাল বাস (শাহ আমানত, এবি ট্রাভেলস ও অন্যান্য) চলাচল বন্ধ রাখা। সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত করন এবং নিরবিচ্ছিন্ন ট্রাফিক মনিটরিং ব্যবস্থা। এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, নিরাপদ সড়ক সকলেরই কাম্য।
আমরা চাইনা আমাদের আর কোনো ভাই অকালে প্রাণ হারাক। তাই, আমাদের চার দফা দাবিগুলো আমরা জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিগুলো তুলে ধরছি।
তৃতীয় বর্ষের পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিক লতিফ বলেন, আজ আমরা এখানে দাড়িয়েছি নিরাপদ সড়কের জন্য। আমাদের চাওয়া আর যকোনো কোনো মায়ের কোল যেনো খালি না হয়, কোনো ভাই যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
উপচার্য মহোদয়ের মাধ্যমে প্রশাসনের উপর মহল পর্যন্ত আমরা এই বার্তা দিতে চাই যেনো তারা দ্রুত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যে কাপ্তাই সড়কের বেশ কিছু জায়গায় ট্রাফিক পুলিশদের অবস্থান নিয়ে কর্মতৎপর থাকতে দেখা গেছে।
আমরা আহ্বান জানাবো, এটা যেনো শুধুমাত্র লোকদেখানো বা দায়সারা কাজ না হয়ে বরং সমাধানের একটি মাধ্যম হয়।
চুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২১ আবর্তের শিক্ষার্থী সীমান্ত চক্রবর্তী বলেন, ভার্সিটি প্রশাসন সহায়তা করলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া আমরা পাচ্ছিলাম না।
তাই আজকের আমাদের প্রেস ক্লাবের এই মানববন্ধন। মানববন্ধনে জেলা প্রশাসকের উদ্দেশ্য চুয়েটের সাধারণ শিক্ষাথীদের পক্ষে আশিকুল ইসলাম তানিম বলেন,
জেলা প্রশাসক আমাদের চুয়েটের উপাচার্যকে আশ্বাস দিয়েছেন, আমাদের যে নিরাপদ সড়কের দাবি সমূহ জেলা প্রশাসন ও সড়ক এবং জনপদ সম্পকিত আছে, সেগুলো পূরণে জেলা প্রশাসক যথেষ্ট পরিমাণ সাহায্য সহযোগীতা করবেন।
কিন্তু এখনও এ কাজের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাইনি। তাই আজ আমরা এ শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন পালন করছি।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে বাসের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন।
এ ছাড়া গুরুতর আহত হন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আরও এক শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা দশ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন।
পরবর্তীতে প্রশাসনের আশ্বাসে সড়ক অবরোধ স্থগিত করলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষনা দেন।
মেসেঞ্জার/আকাশ/তারেক