ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪

The Daily Messenger

মেগাঋণের বোঝা দেশের মানুষের উপর চাপানো হচ্ছে : আমীর খসরু

ডেইলি ম্যাসেঞ্জারের মুখোমুখি আমীর খসরু

আবদুর রহিম

প্রকাশিত: ২১:১১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

আপডেট: ২১:১৩, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

মেগাঋণের বোঝা দেশের মানুষের উপর চাপানো হচ্ছে : আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যআমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ছবি : সংগৃহীত

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সাবেক মন্ত্রী। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন, সরকারের মেঘা প্রকল্পের মেঘাঋণ প্রসঙ্গ এবং আগামী উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ডেইলি ম্যাসেঞ্জারের মুখোমুখি হয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন আমাদের স্টাফ রিপোর্টার আবদুর রহিম। 

ডেইলি ম্যাসেঞ্জার: দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন প্রসঙ্গে কিছু বলুন  

আমীর খসরু: বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ এই সরকারের ভোট ব্যবস্থাকে বর্জন করেছে। ৭ জানুয়ারি কোন ভোট হয়নি। সেদিন হয়েছে গণভোট বর্জন। ৯৫% মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাদের ডাকে সমর্থন দিয়ে মানুষ ঘরে বসে কথা বলেছে। বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে তার পরেও মানুষও ভোট দিতে যায়নি। সুতরাং অবস্থান খুব পরিষ্কার ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সমস্ত জাতি ঐক্যবদ্ধ। মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, তার রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য জাতি ঐক্যবদ্ধ। যে ৫ শতাংশ মানুষ ভোটে গিয়েছে যে দলগুলো ভোটে গিয়েছে তারাও বলেছে ভোট হয়নি। আওয়ামী লীগের যারা ডামি ক্যান্ডিডেট তারাও বলেছে ভোট হয়নি। আওয়ামী লীগের যারা হেরে গিয়েছে তারাও বলছে ভোট হয়নি। ভোট হয়েছে শুধু বলছে শেখ হাসিনা আর তার কয়েকজন মন্ত্রী। ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি, এর থেকে বড় প্রত্যাখ্যান আর কি হতে পারে। তাদের কোনো অবস্থান নেই, নৌকা ডুবে গিয়েছে। এই ভয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকা মার্কা তুলে ফেলেছে। আইন করেছে নৌকা থাকবে কিন্তু নৌকা থাকলে মানুষ বয়কট করছে সেই ভয়ে মার্কা ব্যবহার থেকে বিরত রয়েছে। নৌকা বাদ দিয়ে খেলতে নেমেছে কিন্তু ভোট চুরির প্রকল্প তাদের হাতে রয়ে গেছে। সুতরাং ওই নৌকা বাদ দিয়ে ভোট চুরি করবে। নৌকা বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে কাকে কয়টা সিট দিবে। বানরের পিঠা ভাগের মত। 

ডেইলি ম্যাসেঞ্জার: সরকারের মেগাপ্রজেক্টের সঙ্গে মেঘাঋণের সংখ্যাও বাড়ছে এ নিয়ে কী বলবেন? 

আমীর খসরু : শুধু ঋণ পরিষদ নয়, ব্যাংকগুলো যেভাবে লুটপাট করেছে, যেভাবে টাকা পাচার হয়েছে, আজকে মেঘাঋণের বোঝা দেশের মানুষের উপর যেভাবে চাপানো হচ্ছে, বড় কথা হচ্ছে ১০০ টাকার প্রজেক্টকে ৩০০ টাকা করা হয়েছে। ৩০০ টাকার দায়িত্ব বাংলাদেশের মানুষকে নিতে হবে। তারা (আওয়ামী লীগ) তো টাকা বিদেশে নিয়ে গেছে। আজকের ব্যাংকিং সেক্টর এবং ডলার সংকটে ফেলে দিয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ গ্যাস সেক্টর থেকে তারা পকেট ভরছে আর বাংলাদেশের মানুষ এটা পূরণ করছে। পকেট ভরে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে আরো সাধারণ মানুষকে এগুলো পূরণ করতে হচ্ছে। শুধু নিত্যপণ্য উচ্চমূল্য করেছে তা নয়, বিভিন্ন ট্যাক্সের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ থেকে আদায় করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের পকেট খালি হচ্ছে, ওদের পকেট ভরছে, আর সেই টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কঠিন সময়ের সম্মুখীন।

ডেইলি ম্যাসেঞ্জার: এতো দমন পীড়নের পরও বিএনপি ঐক্যবদ্ধ থাকার শক্তিটা কোথায়? 

আমীর খসরু: শক্তি হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি জনমুখী। বিএনপি মানুষের জন্য রাজনীতি করছে, মানুষের অধিকার আদায়ের রাজনীতি করছে, মানুষের ভাত কাপড়ের জন্য রাজনীতি করছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের জন্য রাজনীতি করছে। বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের জন্য জীবন দিচ্ছে বিএনপি। হাজার হাজার নেতা কর্মীরা জীবন দিচ্ছে। জেলখানাতে হাত কড়া অবস্থান নেতাকর্মীরা জীবন দিচ্ছে। বিএনপির ৫০ লক্ষ নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ছেলেপেলেরা চাকরি হারিয়েছে, ব্যবসা হারিয়েছে, বাড়িঘর হারিয়েছে। ফসলের মাঠে জীবন যাপন করছে। তারপরও আগের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। জ্বলে পুড়ে খাঁটি সোনা হয়ে গেছে। বিএনপির মতো শক্তিশালী দল শুধু বাংলাদেশের নয় এই অঞ্চলে আর কয়টা আছে আমরা জানা নেই। 

ডেইলি ম্যাসেঞ্জার: জনসমর্থন থাকার পরও আন্দোলনে বারবার ব্যর্থ হওয়ার কারণ কি? 

আমীর খসরু: আন্দোলন তো ব্যর্থ হয়নি, আন্দোলন সফল হয়েছে। ৯৫ শতাংশ মানুষ যে ভোট কেন্দ্রে যায়নি এটাই আন্দোলনের সফলতা। যারা ভোটে গিয়েছে তারাও বলছেন নির্বাচন হয়নি। এছাড়া বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি এটাও সফলতা। এত দমন পীড়ন ভয়-ভীতি, গুম, খুন, হত্যার পরও বিএনপি অটল রয়েছে। এরপরও ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি এটাই সফলতা ভোটকেন্দ্রে জানি এটাই সফলতা। 

ডেইলি ম্যাসেঞ্জার: ঢাকায় কয়েক দফা লাখ লাখ নেতাকর্মী জমায়েত করেও কেন আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি বিএনপি?

আমীর খসরু: যারা অস্ত্র দিয়ে গুম খুন করে, টিয়ার গ্যাস মেরে, সাউন্ড গ্রেনেড মেরে,রাবার বুলেট মেরে, হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছে। এরা সেনাবাহিনী 'কু' করেরও ক্ষমতা দখল করতে পারে, সেনাবাহিনী একভাবে করে আর তারা (আওয়ামী লীগ) এভাবে করছে। জনগণের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। সুতরাং বিএনপি রাজনৈতিক ভাবেও জয়ী হয়েছে, নৈতিকভাবেও জয় হয়েছে। তারা (আওয়ামী লীগ) রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে নৈতিকভাবে অপরাজিত হয়েছে। তারা বারবার কীভাবে ক্ষমতা দখল করেছে এটা মানুষ দেখেছে। একটি অনৈতিক দল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে, একটি কর্তৃত্ববাদী হয়ে তারা ক্ষমতা দখল করেছে। সুতরাং আন্দোলন সফল হয়েছে। ৭ জানুয়ারির পর জাতি আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ। 

ডেইলি ম্যাসেঞ্জার: বিদেশিরা কী এখনো বিএনপির পক্ষে আছে? 

আমীর খসরু: বাংলাদেশে যে নির্বাচন হয়নি; এটা তারা পরিষ্কার করেছে। জাতিসংঘ পরিষ্কার করে বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নও পরিষ্কার করে বলেছে, অস্ট্রেলিয়া সিনেট বলেছে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে, ইউনাইটেড ন্যাশনস বলেছে। তারা পরিষ্কারভাবে বলেছে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং নির্বাচন এবং মানবাধিকার নিয়ে তাদের যে অবস্থান কারো কোন পরিবর্তন নেই।

মেসেঞ্জার/সজিব

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700