ছবি: সৌজন্য
গাইবান্ধার ফুলছড়িতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত নুরুন্নবী মিয়ার (৫০) মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে জমিজমা বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
সকালে নিহত নুরুন্নবীর (৫০) লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছালে হত্যাকারীদের শাস্তির দাবীতে লাশ নিয়ে স্বজনেরা ফুলছড়ি থানার সামনে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা এক পর্যায়ে পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে থানা চত্বরে ঢুকে পড়ে এবং চড়াও হয়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে বিক্ষোভকারীরা পুনরায় সমবেত হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, নিহতের মেয়ে নুরানী খাতুন, স্বজন শামসুজ্জোহা বাবলু, মতিয়ার রহমান সহ অনেকে। মানববন্ধনে বক্তারা, খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী জানান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ বুড়াইল (বোচারবাজার) গ্রামের নুরুন্নবী মিয়ার সাথে প্রতিবেশি গোফ্ফার আলীর দীর্ঘদিন থেকে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল।
এরই এক পর্যায়ে গত সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ৮ টার দিকে নুরুন্নবী মিয়ার ভাগিনা চাঁদ মিয়া ও কেরু মিয়া কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে গাইবান্ধা শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চন্দিয়া এলাকায় পৌঁছালে গোফ্ফার আলী সহ তার সঙ্গীয়রা চাঁদ মিয়া ও কেরু মিয়ার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে আহত করে।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। এঘটনার পর হামলাকারীরা বাড়িতে এসে সোমবার দুপুরে পুনরায় নুরুন্নবী মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
এসময় তাদের হামলায় নুরুন্নবী মিয়া (৫০), তার ছেলে সোয়াইব হাসান শুভ (১৯), স্বজন নুরুজ্জামান মিয়া (৩০), আব্দুস ছাত্তার (৪৫), নুরবানী বেগম (৪৫) সহ অন্তত ১০ আহত হয়। এদের মধ্যে আহত ৪জন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর গুরুতর আহত নুরুন্নবী মিয়াকে প্রথমে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে তিনি মারা যান। নিহত নুরুনবী মিয়া ফুলছড়ি উপজেলা উদাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামের বেলা শেখের পুত্র।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সোমবার সকালে দুইপক্ষ মারামারি করে। বিকেলে উভয়পক্ষ থানায় এজাহার দায়ের করে। নিহত নুরুন্নবী মিয়ার স্বজনের দায়েরকৃত এজাহার নামীয় আসামী গোফ্ফার মিয়া ও জহুরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
মেসেঞ্জার/শাকিল/মাহবুব