ছবি : মেসেঞ্জার
একদিন পরেই মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকার ব্যস্ততম শহর থেকে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার মানুষেরা শেকড়ের সন্ধ্যানে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে। দুদিন আগেও এ মহাসড়কে বিভিন্ন পরিবহন দেখা গেলেও ঈদের আগের দিন বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক ফাঁকা রয়েছে। ফলে কোনো ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষজন।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের মুলিবাড়ি, কাঠাল তলা, কড্ডার মোড়, নলকা, পাঁচিলা, হাটিকুমরুল ও চান্দাইকোনা এলাকা ঘুরে মহাসড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে, দুই থেকে ৪টা করে যানবাহন গতি নিয়ে চলাচল করছে। এছাড়াও মহাসড়কে তেমন কোনো যাত্রীও নেই। কিছু মানুষজন ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে বাড়ি ফিরছে।
জানা যায়, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের চারটি রুট দিয়ে ২২ জেলার গাড়ি চলাচল করে। প্রতি বছর ঈদের মৌসুমে দুই/তিনগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করে এ রুট দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরেই সিরাজগঞ্জের এসব মহাসড়ক ছিল উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের গলার কাঁটা। এ বছর সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ কাজের অগ্রগতি ও পুলিশি তৎপরতার কারণে যানজট এবং দুর্ভোগ মুক্ত রয়েছে সিরাজগঞ্জের সব মহাসড়ক। এবারের ঈদযাত্রায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন মানুষজন।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, গত দুইদিন উত্তরে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ ছিলো। দিন-রাত হাজার হাজার গাড়ি পারাপার হয়েছে। সেই যানবাহনগুলো দীর্ঘ লাইন ধরে চলাচল করেছে। তবে পুলিশ তৎপর থাকায় এমহাসড়কে কোথাও কোনো গাড়ির যানজট হয়নি। স্বস্তিত্বে বাড়িতে ফিরেছে মানুষজন।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. জাফর উল্লাহ রুবেল বলেন, ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে মহাসড়ক মনিটরিং করা হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দিলেই তাৎক্ষণিক পুলিশের টিম পাঠিয়ে সমাধান করা হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কে যানবাহন নেই বললেই চলে। মাঝে মাঝে দুই-চারটা গাড়ি চলাচল করছে। বাকি সময় মহাসড়ক ফাঁকাই থাকছে। সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে কোনো ভোগান্তি না থাকায় সবাই আগেই পৌঁছে গেছেন। এবারে অনেকটা স্বস্তির ঈদযাত্রা হচ্ছে।
এদিকে, আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু পার হয়েছে ৪৭ হাজার ৭৫৫টি যানবাহন। এর মধ্যে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে ৩৩ হাজার ১৩১ ও উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী লেনে ১৪ হাজার ৬২৪টি গাড়ি চলাচল করেছে। এতে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৯৯ হাজার ৪০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এরমধ্যে পশ্চিম টোলপ্লাজায় ১ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার ৮৫০ টাকা ও পূর্ব টোলপ্লাজায় ২ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৫৫০ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল হক পাভেল এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ২৪ ঘণ্টায় বছরের সর্বোচ্চ টোল আদায় হয়েছে। এযাবৎকালের তৃতীয় সর্বোচ্চ টোল আদায়। সর্বোচ্চ টোল আদায় হয়েছিল গত কোরবানি ঈদে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকারও বেশি। এবার মোট টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৯৯ হাজার ৪০০ টাকা।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সার্বিক চেষ্টা করেছে। জেলার সব মহাসড়কে ৭০০ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেই সঙ্গে পেট্রোল টিম, মোবাইল টিমসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ৬টি রেকার রাখা আছে। দুর্ঘটনাজনিত কারণে গাড়ি বিকল হলে তাৎক্ষণিক সেটাকে সরিয়ে ফেলা হবে। থ্রি-হুইলার ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে।
মেসেঞ্জার/অদিত্য/ফামিমা