ঢাকা,  মঙ্গলবার
০৭ মে ২০২৪

The Daily Messenger

তীব্র তাপদাহে ঝিনাইদহে পানি সংকট

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:২০, ২২ এপ্রিল ২০২৪

তীব্র তাপদাহে ঝিনাইদহে পানি সংকট

ছবি : মেসেঞ্জার

তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলা। এক দিকে গরমে প্রাণিকূল হাঁসফাঁস করছে। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে পানির সংকট। হস্তাচালিত নলকূপ এবং স্যালোমেশিনে পানি উঠছে না। গৃহস্থালি ও মাঠের কাজে উভয়ই সংকটে বিপাকে পড়ছে কৃষক।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, ইরি ধানের সেচ কাজে এবং পুকুর খনন করে মাছের চাষের জন্যে মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। এছাড়াও প্রচন্ড তাপাদহে মহাসড়কগুলোর পিচ গলতে শুরুকরেছে। যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

চরম সংকটে পড়ছেন কৃষক এবং খেটেখাওয়া দিনমজুররা। কালীগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালী গ্রামের আনন্দ ঘোষ জানান, তাদের বাড়িতে হস্তচালিত টিউব্ওয়েল রয়েছে কিন্তু গত ১৫ দিন ধরে পানি উঠছে না।

এছাড়াও একই এলাকার মনোরঞ্জন জানান তার বাড়িতে ২ হর্স পাওয়ারের মটর রয়েছে কিন্তু তাতেও পানি ঠিক মতো উঠছে না। আনন্দবাগ গ্রামের আকাশ দাস জানান, তাদের গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েল ও মটরে পানি উঠছে না।

যে দুই একটি মটরে পানি উঠছে সেখান থেকে গ্রামবাসী পানি নিচ্ছে।

ঝিনাইদহের বাজার গোপালপুর মাঠে স্যালোইঞ্জিন চালিয়ে ধানের সেচ কাজ করেন ইবাদত হোসেন। দুই সপ্তাহ আগেও তার সেচ পাম্পে পর্যাপ্ত পানি উঠত।

এখন ৪ থেকে ৫ ফুট মাটির গভীরে মেশিন বসিয়েও পানি উঠছে না। ভারি বৃষ্টি না হলে ইবাদতের মতো ঝিনাইদহের হাজারো কৃষক জমিতে সেচ নিয়ে বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আবার হস্তচালিত টিউবওয়েল একইভাবে পানি উঠছে না। বেশ কয়েক বছর জেলায় প্রায় ৫০ হাজার টিউবওয়েলে কম পানি উঠছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলায় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক নলকূপে পানি কম উঠছে। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ফুট নিচে পানির স্তর পাওয়া যায়।

কিন্তু এখন ৩০ থেকে ৪০ ফুট নিচেও পানির লেয়ার মিলছে না। জেলার বেশির ভাগ বিল-ঝিল, জলাশয় ও পুকুর-নদীর পানি  একেবারেই শুকিয়ে গেছে।

জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত চিত্রা, বেগবতি নদীতে কোন পানি নেই। বিশেষ করে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদনদীর প্রায় ৮০ শতাংশ পানি শুকিয়ে গেছে। এসব নদীর তলদেশে কৃষকরা এখন ধানচাষ করছেন।

জেলা কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন বলছে, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো কয়েক হাজার গভীর ও অগভীর নলকূপ বসানো হয়েছে।

এসব নলকূপ থেকে নিয়ম না মেনে পানি উত্তোলন করায় স্তর নেমে যাচ্ছে। বাজার গোপালপরের ইলেকট্রিশিয়ান হুমায়ুন কবির বলেন, বর্তমান প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ জন জানাচ্ছেন তার টিউবওয়েলর মোটরে পানি উঠছে না।

কিন্তু এর কোনো সমাধান দিতে পারছি না। বৃষ্টি হলে সমস্যা স্বাভাবিক হবে বলে তিনি মনে করেন। 

জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, ঝিনাইদহ জেলায় কত হাজার বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে নলকূপ রয়েছে, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই।

সরকারিভাবে জেলায় ১৭ হাজার গভীর ও ১৮ হাজার অগভীর নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপে পানি উত্তোলন স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। 

ঝিনাইদহ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মো. জাহিদ হাসান জানান, এখন শুষ্ক সময়ে নদ-নদীর পানি কমে আসে।

যে কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কিছুটা নেমে যায়। পানি ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। নিয়ম মেনে স্যালোপাম্প স্থাপন করলে পানির সংকট কমবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

মেসেঞ্জার/বিপাশ/তারেক

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700