ঢাকা,  বুধবার
০৮ মে ২০২৪

The Daily Messenger

ঠাকুরগাঁওয়ে পানির দামে সবজি, ৪ টাকা কেজি টমেটো

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে পানির দামে সবজি, ৪ টাকা কেজি টমেটো

ছবি : মেসেঞ্জার

যে টমেটো গত বছর জমিতে বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে। এবার সেই টমেটো চাষিরা বিক্রি করছেন মাত্র থেকে টাকায়।

ভরা মৌসুমে টমেটো ভালো দামে বিক্রি করতে পারলেও, শেষ সময়ে কৃষকের মাথায় হাত। ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এবার টমোটোর বাম্পার ফলন হয়েছে।

উত্তরাঞ্চলে জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে সবজির বড় মোকাম গোবিন্দনগর। ঠাকুরগাঁওয়ে থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি সরবরাহ করা হয়।

শীত মৌসুমেই অঞ্চলের চাষীরা বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেন। কিন্তু গত কয়েক দিন থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। আর দাম না পেয়ে অনেক টমেটো ফেলে দিচ্ছেন অঞ্চলের চাষীরা।

সারা দেশের মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক পরিমান টমেটো চাষ হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা দাম পেলেও বর্তমান বাজারে টমেটোর দাম - টাকা কেজি।

আবার অনেক চাষী টমেটো বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে চাষীদের অনেকেই টমেটো ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে চাষীরা কম দামে টমেটো বিক্রি করলেও সাধারণ ক্রেতারা বেশি দামে বাজার থেকে টমেটো কিনছেন।

সদর উপজেলার নারগুন এলাকার চাষী এনামুল বলেন, মৌসুমের শুরুতে মাত্র কয়েক দিন টমেটোর দাম ভালো পেয়েছি। বর্তমানে বাজারে কেজিপ্রতি টমেটো থেকে টাকা দামে বিক্রি করতেছি। বাজারে সেই টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকাই। বেশি দামে বিক্রি হলেও আমরা সেই সে দাম পাচ্ছি না।

চাষীরা আড়তদারদের কাছে কেজি প্রতি মাত্র থেকে টাকা দামে টমেটো বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ জমি থেকে টমেটো তোলার জন্য শ্রমিককে টাকা আরও বেশি দিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করতে খরচ হয় ২০-২৫ হাজার টাকা। কোনো কৃষকই এবার উৎপাদন খরচ তুলতে পারবেন না। ফলে জেলার টমেটো চাষীরা আমার মতো সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

জেলার গড়েয়া ইউনিয়নের চণ্ডিপুর এলাকার প্রচুর পরিমাণে বাঁধাকপি ফুলকপি সহ বিভিন্ন সবজি চাষ হয়।

সদর উপজেলার কপি চাষী আবদুল মালেক বলেন, গড়েয়া আড়তে বাজারে সবজির বড় মোকাম রয়েছে। মোকাম থেকে প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজি সরবরাহ করা হয়। মোকামে এখন চাষীরা প্রতি পিস বাঁধা ফুলকপি থেকে টাকা দামে বিক্রি করছেন।

এত কম দামে এলাকার চাষীরা কখনও কপি বিক্রি করেননি। একইভাবে পাট শাক সহ সব সবজি বিক্রি হচ্ছে টাকা আটি দরে। ফলে এলাকার কপি এবং সবজি চাষীরা মৌসুমে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে পেঁপে এবং লাউ চাষ হয়। উপজেলা সদরের লাউ চাষী নিজাম জানান, অঞ্চলের লাউ চাষীরা বর্তমানে আড়তদারদের কাছে প্রতি পিচ লাউ - টাকা দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অথচ গতবছর ২০-২৫ টাকা প্রতি পিচ দরে বিক্রি করেছেন। এছাড়া শসা বিক্রি হচ্ছে মাত্র - টাকা কেজি দরে। শসা মাসখানেক আগে চাষীরা ২০-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। একইভাবে বেগুনের দামও কমেছে।

ঠাকুরগাঁওয়ে সবজির বড় মোকাম পৌরসভার গোবিন্দনগর এলাকায়। মোকামের আড়তদার মতিন মিয়া বলেন, বর্তমানে সারাদেশেই সবজির দাম কম। কারণে ঠাকুরগাঁওয়ে আড়তদাররাও চাষীদের কাম দামে সবজি কিনছেন।

এছাড়া মৌসুমে সবজির আবাদ বেশি হয়েছে। ফলনও বেড়েছে। সবমিলিয়ে এবার সবজির দাম কম। তবে বেশি দামে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।

সোমবার দুপুরে পৌরসভার কালিবাড়ি সবচেয়ে বড় সবজির বাজার সবজি কিনছিলেন ইব্র্রাহিম। তিনি বলেন, কম দামের কারণে চাষীরা টমেটো ফেলে দিলেও সাধারণ ক্রেতারা ১৫-২০ টাকা কেজি দরে টমেটো কিনছেন।

চাষীরা দাম না পেলেও আড়তদার এবং খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে সাধারণ ক্রেতারা বেশি দামে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে অন্য বছরের তুলনায় সময়ে ঠাকুরগাঁওয়ে সবজির দাম অনেক কম বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা সবজি চাষের জন্য উপযোগী। ব্যাপক পরিমাণের সবজি উৎপন্ন হয় এই জেলায়। চাহিদার তুলনায় বেশি সবজির উৎপাদন হওয়ার কারনে দাম অনেকটা কম।

তবে ঠাকুরগাঁও জেলা বাহিরে যেন তারা ভালোভাবে সবজি বিক্রি করতে পারে সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। কৃষকদের বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন সময় কিভাবে সবজি চাষ করা যায় সেই পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।

মেসেঞ্জার/আরিফ/আপেল

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700