ছবি : মেসেঞ্জার
হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জের অধিকাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর বোরো ফসলে। কৃষকরা স্ত্রী-সন্তানাদি নিয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনেন এরই মাঝে। ফসল ভালোবাবে গোলায় উঠলে তাদের স্বপ্নপূরণ হয়। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে ফসলহানি ঘটলে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় তাদের। তবে এ বছর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে হাওরপাড়ের কৃষকের।
স্বপ্নপূরণে আপ্লুত সাংহাই হাওরের কৃষক করিম মিয়া। স্ত্রী, ২ ছেলে ৩ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। তিনিই সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী। এবার হাওরে তার ৭ বিঘা জমিতে বাম্পার ফলন হয়েছে। শ্রমিক সংকট থাকলেও কষ্ট করে ধান কেটে, কাটা, মাড়াই শেষে ঘরে তুলেছেন তিনি।
সোনার ধান ঘরে তুলতে পেরে তার চোখেমুখে এখন হাসির ঝিলিক। সারা বছরের খাদ্যের জোগাড় এখন তার ঘরে। ছেলেমেয়ে নিয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকার উপায় হয়েছে তার।
শুধু করিম মিয়ার জমিতেই নয় পুরো শান্তিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। দুর্যোগ-দুর্বিপাক ছাড়াই সময়মতো ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশিতে আত্মহারা কৃষক পরিবার।
এবারের বৈশাখের শুরু থেকেই প্রখর রোদ্দুর ও তাপদাহ মাথায় নিয়ে কৃষকরা বোরো ধান কাটা, মাড়াই এবং ঘরে তোলার কাজে নিরন্তর সময় কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে বৈরী আবহাওয়ার আশঙ্কায় মাঠে মাঠে ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
এদিকে, ধান মাড়াই শেষে গোলায় তোলা নিয়ে মহাব্যস্ত কৃষাণিরা। এ যেন কৃষকদের সারা বছরের স্বপ্ন বুনা কষ্টে উপার্জিত বোরো ফসল ঘরে তোলার অন্যরকম এক আনন্দ। সকল বয়সের মানুষই এখন এই যুদ্ধে সামিল।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে ২২ হাজার ৬৫৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এই হিসেবে চাল হবে ৯৫ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৩৮০ কোটি টাকার উর্দ্ধে। এ নতুন জাতের ধানের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন হাওরের কৃষক।
উৎপাদন বাড়ায় এসব ধানের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে তাদের। এখন পর্যন্ত হাওরে প্রায় ৯০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনরকম সমস্যা ছাড়া ধান ঘরে তুলতে পেরে খুশি কৃষকরা। আর ২-৩ দিনের মধ্যেই শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। আশাকরি এবার ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে।
মেসেঞ্জার/আপেল