ঢাকা,  সোমবার
২৭ মে ২০২৪

The Daily Messenger

কলেজ সভাপতি ও অধ্যক্ষ মুখোমুখি, বিপাকে শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:১২, ৬ মে ২০২৪

আপডেট: ১৮:৩২, ৬ মে ২০২৪

কলেজ সভাপতি ও অধ্যক্ষ মুখোমুখি, বিপাকে শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী

ছবি : মেসেঞ্জার

খুলনার কয়রায় খান সাহেব কোমর উদ্দীন কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডাঃ খান আহমেদ হেলালী ও কলেজের অধ্যক্ষ ড.চয়ন কুমার রায় কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে মুখোমুখি অবস্হানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার ফলে পাঠদান ও স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টায় খান সাহেব কোমর উদ্দীন কলেজের মুল ফটকের সামনে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকার সুশীলসমাজের ব্যানারে অধ্যক্ষ ড. চয়ন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, জমির বায়না বাবদ ভূয়া ভাউচার তৈরী, শিক্ষকদের বোনাসের ভূয়া ভাউচার তৈরি, কলেজ ফন্ডের টাকা আত্মসাৎ, কর্মচারীদের নামীয় লোন আত্মসাৎ, ভূয়া সার্টিফিকেট তৈরী সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

অপরদিকে সোমবার (৬ মে) অধ্যক্ষ ড. চয়ন কুমার রায়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনের বিরুদ্ধে কলেজের পক্ষ থেকে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর ব্যানারে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে প্রতিবাদ সভা কোন শিক্ষকদের উপস্হিতি পরিলক্ষিত হয়নি। তবে সভাপতির বাধায় প্রতিবাদ সভায় কোন শিক্ষক যোগদান করেননি।

খান সাহেব কোমর উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষ ড.চয়ন কুমার রায় বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর দেখি কলেজের অর্থনৈতিক বিষয়ে কোন স্বচ্ছতা নাই এবং জবাবদিহিতা নাই। এ ব্যাপারে যখনই আমি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কথা বলেছি তখন থেকেই সভাপতির সাথে আমার দ্বন্দ্বের শুরু হয়। তিনি আমাকে দেখে নেবেন বলে বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছেন। ওনারা খুবই প্রভাবশালী পরিবার। আমি দৌড়ের উপরে আছি। প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো সময় দিতে পারছি না।

নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ড. কুমার রায় জানান, সভাপতি সাহেবকে মাইনাস করে নিয়োগ বোর্ড গঠন আদৌ কি সম্ভব। নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি তো হন কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। সে সময় আমি যদি নিয়োগ বাণিজ্য করে থাকি। তাহলে সে সময় আমার বিরুদ্ধে কেন তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

খান সাহেব কোমর উদ্দীন কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডাঃ খান আহমেদ হেলালী বলেন, আমি পেশায় একজন ডাক্তার। রোগী দেখা নিয়ে বেশি সময় ব্যস্ত থাকি। ড. চয়ন কুমার রায়কে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে। কলেজের কোন বিষয়ে আমি খুব একটা খেয়াল করতাম না। পরবর্তীতে শিক্ষক কর্মচারীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আমার কাছে অভিযোগ করলে আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা শুরু করি। কলেজের অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, শিক্ষকদের কাছ থেকে লোন উত্তোলন সহ ভুয়া ভাউচার তৈরির প্রমাণ পাই।

অধ্যক্ষ চয়ন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের রায় পেলে আইনগত ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।

অধ্যক্ষের পক্ষে প্রতিবাদ সভায় শিক্ষকদের যোগদানে বাধা প্রদান সম্পর্কে জানতে চাইলে সভাপতি আরও বলেন, আমি শিক্ষকদের কাছে ফোন দিয়েছিলাম, শিক্ষকদেরকে বলেছি একজন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনারা কেন প্রতিবাদে নামবেন। আপনাদের উৎসব ভাতা নিয়ে নয়ছয় করেছে।

খান সাহেব কোমর উদ্দীন কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজুল আকবর বলেন, ঐতিহ্যবাহী খান সাহেব কমির উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতি মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় কলেজে অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। শিক্ষকরা উভয় সংকটে রয়েছে। ফলে সঠিকভাবে পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট খুব খারাপ হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। সভাপতি ও অধ্যক্ষ সাহেবের মুখোমুখি অবস্থার অবসান না ঘটলে কলেজের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হবে এলাকাবাসীর ধারনা।

মেসেঞ্জার/কামাল/আপেল

Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768