ফাইল ছবি
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেছেন, ন্যাশনাল ব্যাংক অন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে না এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগে যা হওয়ার হয়েছে, আর কোনো লুটপাট হবে না। ব্যাংক থেকে যারা টাকা নিয়েছেন, তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। এক বছরের মধ্যে আমরা ব্যাংকটিকে আগের অবস্থায় নিতে পারব।
বেসরকারি এই ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমান আরও বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংক দখল হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৬ মে) ঢাকায় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। নতুন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান জানান, আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করে চলেছি। অতীতে এ ব্যাংকে লুটপাট হলেও এখন থেকে আর এক পয়সাও লুটপাট হবে না।
এর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে বেসরকারি ইউসিবি ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত করা হবে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে খলিলুর রহমান বলেন, আমরা একীভূত হতে রাজি নই। বাংলাদেশ ব্যাংককেও এ কথা জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে রাজি হয়েছে। তবে শর্ত দিয়েছে যে এক বছরের মধ্যে ব্যাংককে দুর্বল অবস্থা থেকে ভালো করতে হবে। ফলে এখন আমরা একীভূত করার অবস্থা থেকে মুক্ত।
খলিলুর রহমান জানান, তারা প্রাথমিকভাবে শেয়ারধারী ব্যক্তিদের মাধ্যমে ব্যাংকে এক হাজার কোটি টাকা মূলধন সরবরাহ করবেন। এ ছাড়া পরবর্তী সময় বিভিন্নভাবে তারা আরও তিন হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করবেন। এই আমানত সংগ্রহ করা হবে প্রচারণা ও প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে ন্যাশনাল ব্যাংকের চলমান তারল্য–সংকট নিরসন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খারাপ হয়ে যাওয়া ঋণ পুনঃরুদ্ধারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানিয়ে খলিলুর রহমান বলেন, খারাপ ঋণ পুনরুদ্ধারে কাউকেই কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
ব্যাংকটির নবনিযুক্ত পরিচালক আহসানুল করিম বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে আমরা ন্যাশনাল ব্যাংকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন দেখা চাই। অতীতে যারা পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন, তাদের নিজেদের স্বার্থ ছিল। এ কারণে তারা নিজেদের স্বার্থে কাজ করে ব্যাংককে দুর্বল করেছেন। আর আমরা দেশের স্বার্থে কাজ করতে পরিচালনা পর্ষদে দায়িত্ব নিচ্ছি।
১৯৮৩ সালে প্রথম দেশীয় মালিকানায় বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। বর্তমানে ব্যাংকটির ২২১টি শাখা ও ৬৫টি উপশাখা রয়েছে। এ ছাড়া দেশের মধ্যে দুটি ও দেশের বাইরে চারটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান, জিসিসি অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রে দুটি অর্থ স্থানান্তর প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ, ব্যবস্থাপনা চুক্তিসহ দেশের অভ্যন্তরে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) এবং রেটিং প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকটি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
বর্তমানে ব্যাংকটিতে ২০ লাখ আমানতকারী ও ১ লাখ ঋণগ্রহীতা আছে।
মেসেঞ্জার/হাওলাদার