ঢাকা,  সোমবার
০৬ মে ২০২৪

The Daily Messenger

বিএসএফের গুলিতে নিহত রবিউল, কি হয়েছিলো সেদিন!

আহসান সাকিব হাসান, লালমনিরহাট

প্রকাশিত: ১৬:৫২, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১৭:০৮, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪

বিএসএফের গুলিতে নিহত রবিউল, কি হয়েছিলো সেদিন!

ছবি : মেসেঞ্জার

বিএসএফ'র গুলিতে নিহত হয় রবিউল ইসলাম ওরফে টুকলু। কি হয়েছিলো সেদিন, কেনই বা বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। এর কি কোন কারন ছিলো। অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম আঙ্গরপোতা এলাকার আফজাল হোসেন ও আমেনা বেগম দম্পতির পাঁচ ছেলের মধ্যে নিহত রবিউল ইসলাম তৃতীয় ছেলে। নিজেদের জমিতে চাষাবাদ করেই চলছিল সংসার। ঠিক সিমান্ত থেকে বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৪’শ মিটার। নেই কোন কাঁটাতারের বেড়া। ছোট্ট ঘরে বিএসএফের টহল আর পাশেই রয়েছে তাদের ক্যাম্প। বিষয়টি এমন যে বাড়ির আঙ্গিনায় ভারতের সীমান্ত।

স্থানীয়রা বলছেন, রোববার ভোর আনুমানিক সারে ৩ টায় খবর আসে বিএসএফ রবিউলকে গুলি করে হত্যা করেছে। এরপর পরিবার ও এলাকাবাসীর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত। ছেলেকে হারিয়ে পাগল মা আমেনা বেগম, বাবা আফজাল হোসেন সহ গোটা পরিবার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী বলেন, কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় অনেকেই অবৈধ মালামাল নেয়ার জন্য ভারত সীমান্তে ঢুকে পড়ে। আর সেই মুহূর্তে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে বাংলাদেশীদের। শুনেছি নিহত ব্যক্তি চিনি আনতে গিয়েছিলো সীমান্তে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক প্রতিবেশী বলেন, সীমান্ত অতিক্রম না করলে আমাদের কেন বিএসএফ গুলি করে হত্যা করবে। আমরাই তো ভুল কাজ করি। আমরাই তো ঝুঁকি নিয়ে ভারতে যাই। না গেলে আমাদের কিভাবে ককটেল মারবে আর কিভাবে গুলি করবে।

ভুলটা তো আমাদের, আর ওদের ভুল হয়েছে এভাবে গুলি করে হত্যা না করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া। তাহলে ৫ বছর ১০ বছর পর কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ছেলেটাকে ওর পরিবার ফিরে পেত।

একাধিক প্রতিবেশী বলেন, আমরা যারা সীমান্তে বসবাস করি আমাদের সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। অনেকেই ভুলবশত যদি ভারতের সীমান্তে ঢুকে পড়ে তাহলে তাদের এরকম নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা না করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক। কিন্তু বিএসএফ এমনটা করেনা।

দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান “দ্যা ডেইলি মেসেঞ্জার”-কে বলেন, আবারও একবার বিএসএফের গুলিতে দহগ্রামের প্রান গেলো। নিহত ব্যক্তিকে বিএসএফ হত্যা করেছে। আমি মনে করি, "এভাবে গুলি করে হত্যা করা মানবাধিকার লঙ্ঘন।

ভারতের প্রচলিত ও আন্তর্জাতিক আইন রয়েছে। যেহেতু এদিকে কাঁটাতার নেই কাজেই কেউ যদি ভুল করেও ঢুকে পরে তাহলে বিএসএফ কতৃক আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করুক। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র আমরা চাই আর যেন কোন সীমান্তে এভাবে কারও হত্যা না হয়"।

এর আগে রোববার ভোর সারে ৩ টার দিকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আঙ্গরপোতা বিওপি সীমান্তের ১নং মেইন পিলারের কাছাকাছি ভারতীয় অংশে বিএসএফের একটি টহল দলের গুলিতে নিহত হয় রবিউল। পরে বিএসএফের সহযোগিতায় কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।

এরপর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিএসএফ'র গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় রোববার বিকেলে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি।

এরপর রোববার (২৮ ডিসেম্বর) মরদেহ ফেরত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। সেদিন রাত সাড়ে এগারোটার দিকে পাটগ্রাম উপজেলার তিনবিঘা করিডোরে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। তার পরেই মরদেহ দাফন করা হয়।

মেসেঞ্জার/আপেল

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700