ঢাকা,  সোমবার
০৬ মে ২০২৪

The Daily Messenger

তীব্র দাবদাহে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ২২ এপ্রিল ২০২৪

তীব্র দাবদাহে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়

ছবি : মেসেঞ্জার

তীব্র দাবদাহ, অনাবৃষ্টি প্রচণ্ড খরা থেকে রেহাই পেতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় মহান আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় বিশেষ মোনাজাত করেছেন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৯টার দিকে বৃষ্টির জন্য উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের খড়িলার বিলে খোলা আকাশের নিচে নামাজ আদায় করেন স্থানীয়রা।

বিশেষ নামাজে ইউনিয়নের বল্লভপুর, রসুলপুর, ভবানীপুর, জোতমোড়া বরইচারা গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেন। নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য বিশেষ মোনাজাত করেন তারা।

বৃষ্টির অভাবে কুষ্টিয়ার মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে, নদী খালের পানি তলানিতে ঠেকেছে। অনেক দিন বৃষ্টি না হওয়ায় আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন তারা।

বৃষ্টির জন্য ইসতেস্কার নামাজের পর মোনাজাতে তারা বারবার বলতে থাকেন, হে আল্লাহ, আপনি বৃষ্টিদান করেন। হে আল্লাহ, আপনি বৃষ্টি দেন।

নামাজ মোনাজাত পরিচালনা করেন রসুলপুর মাদ্রাসার হেফজখানার শিক্ষক মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দিন আল ফরিদী। মঙ্গল বুধবার একই জায়গায় সকাল ৮টায় বৃষ্টির আশায় ইস্তিসকার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আয়োজকরা।

মুফতি নাসির উদ্দিন আল ফরিদী জানান, কোরআন-হাসিদের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, মানুষের সৃষ্ট কোনো পাপের কারণে মহান আল্লাহ এমন অনাবৃষ্টি খরা দেন। বৃষ্টি না হলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (.) সাহাবীদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইস্তিসকা নামাজ আদায় করতেন। এজন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তওবা করে ক্ষমা চেয়ে রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন।

মুসল্লিরা বলেন, কুমারখালীতে অনেকদিন ধরে বৃষ্টি হয় না। বৃষ্টি না হওয়ায় তাপদাহে দেশের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। রকম পরিস্থিতে প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহর দরবারে পানি প্রার্থনা করে দোয়া করা সুন্নত। তাই এই নামাজের আয়োজন করা হয়েছে।

আল্লাহ সৃষ্টির কল্যাণে আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। কোরআনের অনেক জায়গায় আসমান থেকে পানি বর্ষণের কথা উল্লেখ আছে। বৃষ্টির পানি বর্ষণের মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের জন্য রিজিকের ফয়সালা করেন।

স্থানীয়রা বলেন, বছর অনাবৃষ্টি কারণে মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড গরম পড়ছে, মানুষের কষ্ট হচ্ছে, ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। জন্য সৃষ্টিকর্তার দরবারে বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করা হয়। আল্লাহর শরণাপন্ন হলে তিনি বিপদ-আপদ, দুঃখকষ্ট, বালা-মুসিবত অবশ্যই দূর করে দেন।

দুনিয়ায় আল্লাহর অজস্র কুদরত নিদর্শনের মধ্যে বৃষ্টি এক বিশেষ নিদর্শন। বৃষ্টি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। বৃষ্টি আল্লাহর খাস রহমতের নিদর্শন।

বৃষ্টি প্রসঙ্গে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি (আল্লাহ) যিনি তার রহমতের (বৃষ্টির) প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদ বাহকরূপে প্রেরণ করেন। যখন তা ঘন মেঘ বহন করে তখন আমি (আল্লাহ) তা নির্জীব ভূখণ্ডের দিকে চালনা করি। পরে সেটা হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি। তারপর তার দ্বারা সব ধরনের ফল-ফসল উৎপাদন করি।

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টি প্রার্থনার সময় বলতেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি তোমার বান্দাকে এবং তোমার পশুদের পানি দান কর। আর তাদের প্রতি তোমার রহমতের বর্ষণ কর এবং তোমার মৃত জমিনকে জীবিত কর।

দহখোলা দক্ষিণ ভবানীপুর কওমী হাফেজিয়া মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা রাসেল মোল্লা জানান, দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি গাছপালাসহ সবাই খুব কষ্টে আছেন। এজন্য তারা বৃষ্টির আশায় নামাজ পড়েছেন। মঙ্গল বুধবারও একই স্থানে বৃষ্টির জন্য নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, কয়েকদিন ধরে সকালে ৩৩-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকছে। বিকেল ৩টার দিকে তা ৩৯-৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। প্রায় এক মাস ধরে কুমারখালীতে বৃষ্টিপাত হয়নি। এছাড়া আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।

মেসেঞ্জার/রাজু/আপেল

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700