ছবি : মেসেঞ্জার
রাজশাহীতে মাদক কারবারির কাছে ডিবি গোয়েন্দা) পুলিশের হেরোইন বিক্রির একটি অডিও নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই পুলিশ সদস্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কনস্টেবল পদে কর্মরত। তার নাম মাহফুজুর রহমান মাহফুজ।
তিন মিনিট ৩৩ সেকেন্ডর ফাঁস হওয়া অডিও কল রেকর্ডে এক নারীর কাছে মাদক বিক্রির প্রস্তাব দিতে শোনা যায়। এছাড়াও তাকে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যেতে উৎসাহীত করতেও শোনা যাচ্ছে।
ফাঁস হওয়া ওই অডিওর কপি রাজশাহীর গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে। তবে হেরোইন বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে ফাঁস হওয়া অডিওর কণ্ঠ তার নয় বলে দাবি করেছেন কনস্টেবল মাহফুজুর রহমান।
তিনি দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সঠিক নয়। অডিও বিষয়টি ডিসি স্যার সব জানেন। আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর অপচেষ্টা চলছে।’
জানা গেছে, সম্প্রতি কনস্টেবল মাহফুজ ফোন করে কথা বলেন মহানগরীর রাজপাড়া থানার বাঁকির মোড় এলাকার সেলিমের স্ত্রী উম্মে খাতুনের সঙ্গে। তিনি একাধিক মাদক মামলার আসামি। কথপোকথনের অডিওতে মাহফুজুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘ওই ভাবি ৩ গ্রাম জিনিস আছে নিবেন’।
অপর দিকে নারী মাদক কারবারি বলেন, ‘জিনিস দিয়ে আবার ধরবেন নাতো আমাকে’।
মাহফুজ বলেন, ‘আরে না, ধরবো না’। নারী বলেন, ‘আপনি তো রায়গা আচেন নাকি আমার উপরে।’ মাহফুজ বলেন, ‘ধর আপনার পাগলা বেটা আমার সম্পর্কে উল্টাপাল্টা কথা বলে বেড়ায়।‘
মাহফুজ বলেন, ‘ওই জিনিস নিবেন, নিলে দিয়ে দিবো। নিলে একা আসেন।‘
নারী বলেন, ’দোকানে কেউ নাই, বেটা আসলে একাই আসছি।‘
বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে উম্মে খাতুনের ছেলে সম্রাট বলেন, ‘ডিবি পুলিশের মাহফুজ তিন দফায় আমাদের কাছে হেরোইন বিক্রি করেছে। যে অডিও ফাঁস হয়েছে ওইদিন ৩ গ্রাম হেরোইন বিক্রির জন্য ফোন করেছিল। এর আগে তিনি ১৪ গ্রাম হেরোইন বিক্রি করেছেন।’
জানা যায়, তিন বছর ধরে কনস্টেবল মাহফুজ মহানগর ডিবিতে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মাসোয়ারা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ডিবি পুলিশে কর্মরত থাকার কারণে মাদক কারবারিদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠেছে তার। ফলে নিজেই মাদক কারবারিদের নিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন।
কনস্টেবল মাহফুজের বিরুদ্ধে নগরীর রাজপাড়া থানার আইডি বাগানপাড়া এলাকার বুলবুলি, জনি, সাইদা, ইমরান নামের মাদক কারবারিদের কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা করে মাসহারা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আরএমপির গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ড. রুহুল আমিন সরকার বলেন, ‘কোন পুলিশ সদস্য মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়লে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কনস্টেবল মাহফুজের অডিও ফাঁসসহ তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি সঠিক হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মেসেঞ্জার/আপেল/আনিসুজ্জামান