ঢাকা,  শুক্রবার
২৬ এপ্রিল ২০২৪

The Daily Messenger

নির্মাণাধীন ভবন থেকে ইট পড়ে শিশু মৃত্যুশয্যায়

ঝিকরগাছা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:০৫, ১৫ জুন ২০২২

আপডেট: ১১:০৬, ১৫ জুন ২০২২

নির্মাণাধীন ভবন থেকে ইট পড়ে শিশু মৃত্যুশয্যায়

চিকিৎসারত অবস্থায় শিশু জান্নাতী (৬)।

যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের প্রি ক্যাডেট স্কুল পাড়ার একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের উপর থেকে ইটের টুকরো পড়ে জান্নাতী(৬) নামের একটি শিশু মারাত্মক আহত হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে জানা যায়, ঝিকরগাছা প্রি ক্যাডেট স্কুলের পাশে মোবারাকপুর গ্রামের ভেজালের ছেলে আলমগীর এবং জাহাঙ্গীর একটি চারতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন। গত ১৩ জুন ঐ বাড়িতে রাজমিস্ত্রী এবং কারেন্ট মিস্ত্রি কাজ করছিল। দুপুর বেলা পার্শ্ববর্তী জুয়েলের বাড়ির ভাড়াটিয়া ঝিকরগাছা বাজারের ডিম ব্যবসায়ী নুর হোসেন বাবুর মেয়ে জান্নাতি(৬) স্কুল থেকে ফিরে রাস্তায় খেলছিল। এমন সময় শ্রমিকদের হাত থেকে ছুটে এসে একটা ইটের টুকরো জান্নাতীর মাথার ওপর পড়লে শিশুটি রক্তে ভিজে সেখানেই ছটফট করতে থাকে।

এদৃশ্য দেখে তার পরিবারের লোকজন এবং উপস্থিত জনতা তাকে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে যশোর নিতে বললে জান্নাতীকে যশোরের কুইন্স (প্রাঃ) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে গতকাল বিকেলে এ্যম্বুলেন্স যোগে শিশুটিকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। পরে জান্নাতীর মাথার অপারেশন সম্পন্ন করেছে ডাক্তারগন। তার অবস্থা এখনও আশংকাজনক বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন।
 
এদিকে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখা যায়, বাড়ি নির্মাণে কোনো ধরনের আত্মরক্ষা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। প্রতিবেশী জরিনা খাতুন জানান, এর আগেও কাজ করার সময় আমার বাড়িতে ইট, কাঠ পড়েছে। বাড়িওয়ালাকে বললে উল্টে আরও মারতে আসে। অনেকেই তাদেরকে বলেছে রাস্তার পাশে নিরাপত্তা নেট দিতে কিন্তু তারা কারো কথা শোনেনি।

বাড়ির মালিক আলমগীর হোসেন জানান, শিশুটি কোথা থেকে চলে আসলো আমরা বুঝতে পারিনি। এর আগে কখনো এরকম ঘটনা ঘটেনি। কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই কেন জানতে চাইলে বলেন, আমাদের কেউ বলেনি তাই প্রয়োজন মনে করিনি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান বাবু জানান, আমি ঘটনাটা শুনেছি। এরকম ঘটনা সত্যি দুঃখজনক। ঐ ভবন মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি পৌরসভাকে অনুরোধ করবো এবং শিশুটি চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলে তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার জনাব ইদ্রিস আলি জানান, ভবন নির্মাণের অনুমতি পত্রে আমরা লিখে দিয়েছি পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু কেউ আইন মানতে চায়না। এই দূর্ঘটনার পর ভবন মালিকের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ করলে আমরা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেবো এবং ক্ষতিপূরণ আদায় করার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো।
 

ডিএম/আরএ

dwl
×
Nagad