ঢাকা,  রোববার
২৮ এপ্রিল ২০২৪

The Daily Messenger

আশুলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা, ঘাতক স্বামী গ্রেপ্তার

সাভার (ঢাকা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ২০ মার্চ ২০২৪

আশুলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা, ঘাতক স্বামী গ্রেপ্তার

ছবি : মেসেঞ্জার

ঢাকার আশুলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন স্বামী। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী মারা গেছেন। তখন থেকেই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ খুজঁছিলেন তিনি।

অ্যাম্বুলেন্সের চালক ঘটনাটি বুঝতে পেরে কৌশলে পুনরায় তাঁদের নিয়ে আশুলিয়ায় রওয়ানা দেন। পথে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯- কল করে ওই ব্যক্তিকে (স্বামী) র‍্যাবের হাতে ধরিয়ে দেন চালক।

বুধবার (২০ মার্চ) বিকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র‍্যাব-, সিপিসি- এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।

আটক ব্যক্তির (স্বামী) নাম শহিদুল ইসলাম মীর(৩৬) তিনি আশুলিয়ার শিমুলতলা দরগারপাড় এলাকার মৃত নজরুল ইসলাম মীরের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ফারজানা তার স্বামী শহিদুল ইসলাম মীর গাজীরচট এলাকার আব্দুল হকের মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। নিহতের স্বামী একজন নেশাগ্রস্থ। নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। অন্য দিনের মতো ঘটনার দিন রাতেও তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে শহিদুল তার স্ত্রী ফারজানাকে কাঠের লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করলে ঘটনাস্থলেই ফারজানার মৃত্যু হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ্যাবের একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে এসে নিহতের স্বামী শহিদুলকে আটক করে।

্যাব-, সিপিসি- এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেপ্তার আসামি শহিদুলের সাথে ১৫ বছর পূর্বে নিহত শিমুর পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।

বৈবাহিক জীবনে তাদের বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। বিবাহের পর হতেই নিহতের কাছে যৌতুক হিসেবে মোটা অংকের টাকা দাবি করে আসছিল। বিভিন্ন সময় শহিদুলের চাহিদা মোতাবেক শিমু তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে শহিদুলকে দিয়ে আসছিল।

একপর্যায়ে শিমু তার চাহিদা মোতাবেক যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত বছর পূর্বে তাদের মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে উভয়পক্ষের আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় শহিদুল পুনরায় শিমুকে বিবাহ করে সংসার শুরু করে। এর কিছুদিন পর হতে শহিদুল আবারো যৌতুকের জন্য শিমুকে চাপ সৃষ্টি মারধর করতো।

তিনি আরও জানান, এরই প্রেক্ষিতে গত ১৯ মার্চ বিকালে যৌতুকের টাকা নিয়ে তাদের মাঝে বাক-বিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। বাক-বিতণ্ডার একপর্যায়ে শহিদুল ভুক্তভোগী শিমুকে এলোপাথারি লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে সন্ধ্যা ৭টায় স্ত্রীকে নিয়ে আশুলিয়ার ইউনিক এলাকার নোভা হাসপাতালে যান স্বামী শহিদুল।

অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে করে স্ত্রীকে নিয়ে রওনা দেন স্বামী।

হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসক রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলে আবার রাত ১০টার দিকে আশুলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। পরে আশুলিয়ায় পৌঁছালেই খবর পেয়ে উপস্থিত হয় র‍্যাব আশুলিয়া থানা পুলিশ।

পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করে র‍্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শহিদুল ভুক্তভোগী শিমু আক্তার ফারজানাকে কাঠের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পরে তাকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অ্যাম্বুলেন্সের চালক মেহেদী হাসান বলেন, আমাকে হাসপাতাল থেকে রোগী দিয়েছিল। আমি সেই রোগী নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে যাই। পরে সেখানকার ডাক্তারদের কাছ থেকে জানতে পারি, রোগীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। পরে বুঝতে পারি স্বামীই তাকে মারধর করেছে।

পরে কৌশলে তাকে আটকে ফেলি। সে আমার হাত-পা ধরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে। কিন্তু আমি তাকে আবার গাড়িতে তুলে আশুলিয়ায় নিয়ে এসে র‍্যাব-পুলিশকে খবর দিই।

ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামীকাল আসামিকে আশুলিয়া থানা থেকে আদালতে পাঠানো হবে

মেসেঞ্জার/নোমান/আপেল

dwl
×
Nagad