ঢাকা,  শনিবার
২৭ এপ্রিল ২০২৪

The Daily Messenger

আশুলিয়ায় চিরকুটে মুঠোফোন নম্বর লিখে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ২৯ মার্চ ২০২৪

আশুলিয়ায় চিরকুটে মুঠোফোন নম্বর লিখে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি

ছবি : মেসেঞ্জার

ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বিভিন্ন গ্রামে সম্প্রতি বেড়েই চলেছে বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা। একশ্রেণির অসাধু চোরচক্র রাতের আঁধারে কৃষকের সেচ মিটার শিল্প প্রতিষ্ঠানের থ্রিফেজ মিটার খুলে নিয়ে যাচ্ছে এবং চিরকুটে মুঠোফোন নম্বর লিখে সাঁটিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। আর চিরকুটে দেয়া নম্বরে কল করলেই বিকাশে চাওয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। দর-কষাকষি করে টাকা পাঠিয়ে ভুক্তভোগী কেউ কেউ মিটার ফেরতও পাচ্ছেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে আশুলিয়ার বাইদগাঁও, কবিরপুর, জিরানী বাজার, দরবাড়িয়া, তেলিবাজার, পূর্ব বাইদগাঁও চাতৈলভিটি এলাকায় গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এসব এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, পর্যন্ত প্রায় অর্ধ শতাধিক থ্রিফেজ মিটার চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, বিদ্যুৎ অফিস ঘুরে টাকা খরচ করে একটি বৈদ্যুতিক মিটারের সংযোগ পেতে হয় তাঁদের। আর সে মিটার রাতের আধারে কে বা কারা নিয়ে যাচ্ছে। আবার চিরকুটে মোবাইলফোন নাম্বার দিয়ে যাচ্ছে। কল করলেই দর-কষাকষি করে টাকা দিয়ে মিটার উদ্ধার করা হচ্ছে। তবে রেখে যাওয়া নাম্বারে যোগাযোগ না করলে মিটার চুরির পর আবারও নতুন মিটারের সংযোগ নিতে হয়। আর এতে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। বিদ্যুৎ সংযোগ দিতেও হয়রানীতে পড়তে হয় তাদের।

পশ্চিম কবিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ইমরান দেওয়ান বলেন, মঙ্গলবার রাতে তার ভাড়া দেয়া একটা কারখানার বাণিজ্যিক মিটার চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। মিটার নিয়ে যাওয়ার সময় হাতে লেখা একটি চিরকুটে মোবাইল নম্বর রেখে যায়। ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলেই মোটা অংকের টাকা চাওয়া হয়। পরে বাধ্য হয়েই অফিসের মাধ্যমে ওই কারখানায় মিটার সংযোগ দেয়া হয়।

বেলতলা এলাকার আনন্দ মোহন জানান, তার কারখানার থ্রিফেজ মিটারও রাতের আধারে চুরি করে নিয়ে যায়। কিন্তু পাশেই একটা চিরকুটে নাম্বার রেখে যায়। ওই নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে ত্রিশ হাজার টাকা দাবি করে। পরে অফিসে যোগাযোগ করেই মিটার নামিয়েছেন তিনি।

চাতৈলভিটি গ্রামের নূরুল ইসলাম জানান, এলাকার একমাত্র সেচপাম্পের মিটারটি চুরি হয় গত মঙ্গলবার রাতে। পরের দিন সকালে গিয়ে মিটারের নিচে একটি চিরকুট দেখতে পান। চিরকুটে দেয়া নাম্বারে যোগাযোগ করে দর-কষাকষির একপর্যায়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে মিটার উদ্ধার করা হয়।

এদের মত বাইদগাঁওয়ের সিরাজ উদ্দিনের ধান ভাঙ্গানোর মেশিনের মিটার, মুরগী ব্যবসায়ী লোকমান হোসেনের মিটার চুরি করে নিয়ে যায় চুরেরা।

ব্যাপারে শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিষয়টি শুনেছি, প্রতিনিয়তই মিটার চুরি যাচ্ছে। বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. মাশফিকুল হাসান জানান, এটা শুধু এখানেই নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটনা ঘটছে। মিটার নিয়ে গিয়ে নাম্বার রেখে যায়। পরে বিকাশে টাকা দিলেও মিটার ফেরত পাচ্ছে না। তবে গ্রাহকের জরুরি সংযোগের প্রয়োজন হলে আমরা দ্রুত মিটারের ব্যবস্থা করে থাকি এবং আইনগত ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- এর আওতায় প্রায় হাজার শিল্প গ্রাহক এবং দেড় হাজার সেচ গ্রাহক রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের থ্রি ফেজ মিটার চুরি রোধে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পাহাড়ার ব্যবস্থা করলে চুরি কমবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- এর আওতায় পর্যন্ত কতগুলো থ্রিফেজ মিটার চুরি গিয়েছে তার কোন তালিকা নেই। তবে ভুক্তভোগীরা চুরির ঘটনায় দপ্তরে অভিযোগ এবং পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও চক্রের সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক বা চুরি যাওয়া মিটারগুলো উদ্ধার করতে পারেনি।

মেসেঞ্জার/নোমান/আপেল

dwl
×
Nagad