ছবি : মেসেঞ্জার
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর খেজের আলী মন্ডল (৬৫) নামে এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে দৌলতপুর থানা পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হত্যাকাণ্ডের ৫ মাস পর রহস্য উন্মোচন করেছে। শেষ পর্যন্ত জানা গেল নিহতের একমাত্র ছেলে আনোয়ার হোসেনই হত্যাকারী।
নিহত খেজের আলীর সামনে পারিবারিক কলহের জেরে আনোয়ারকে তার ছেলে শিশির মারধর করে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ না করায় রাগে ক্ষোভে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ার তার বাবা খেজের আলীকে হত্যা করে।
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে কুষ্টিয়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে পিবিআইর কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপার শহীদ আবু সরোয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দেন।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সংগ্রামপুর গ্রামের ঈদগাহ সংলগ্ন ভুট্টা ক্ষেতে ভিকটিম খেজের আলীর ক্ষত বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়।
পিবিআই এর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, তার একমাত্র ছেলে আনোয়ার হোসেন আনারুল (৪৬) নৃশংসভাবে কোদালের আঘাতে হত্যা করে। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর নিহত খেজের আলীর ভাই নাজির আলী বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করেন।
থানা পুলিশ কোন কুল কিনারা না পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই কুষ্টিয়া জেলার ইউনিটকে দেয়। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামি। তদন্তের সকল কলাকৌশল অবলম্বন করে জানা যায় ঘটনার সাথে আনোয়ার জড়িত।
তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও টানা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আনোয়ার স্বীকার করে যে, সে তার পিতাকে রাতের আধারে কিছু গোপন কথা বলার জন্য গোরস্থান সংলগ্ন ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে পিছন থেকে সজোরে কোদাল দিয়ে ভিকটিমের মাথায় একাধিক আঘাত করে। এতে মাথার মগজ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। ভিকটিম পড়ে গেলে আঘাত করে বুকের হাড় ভেঙ্গে ফেলে এবং মৃত্য নিশ্চিত করে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের দাম্পত্য কলহ, ধার দেনা, পারিবারিক অশান্তি, নিজ পুত্র শিশির (২০) এর দুর্ব্যবহার ইত্যাদি কারণে আনোয়ার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার পিতা খেজের আলীকে হত্যা করে।
তার দেয়া তথ্য ও দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত কোদাল পিবিআই কুষ্টিয়া টিম উদ্ধার করে। আসামী স্বেচ্ছায় হত্যাকান্ড সম্পর্কে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করতে ইচ্ছা পোষন করে। পরবর্তী আইনী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
মেসেঞ্জার/রাজু/আপেল