ছবি : ডেইলি মেসেঞ্জার
মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে আছে শসা। কেনার লোক নেই। ব্যবসায়ীরা দাম বললেও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় মাঠে ফেলে রাখছেন চাষিরা।
কৃষকরা বলছেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কারণে ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শসার দাম কমাতে কোনও চক্র সক্রিয় হয়ে উঠছে কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি তুলছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে শসার বাজার দর বেশি ছিল। কিন্তু মাঝামাঝি সময়ে বাজারে শসার সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে সদরের কয়েকটি মাঠে গিয়ে দেখা গেছে শত শত মণ শসা তুলছেন কৃষকরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতিকেজি শসা ২ টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউবা খেতে তুলে খেতে ফেলে দিচ্ছেন।
সদরের পূর্ব বেগুনবাড়ি গ্রামের শসা চাষী নুর হোসেন জানান, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেন। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম। ভাবলাম খরচ তুলে লাভ হবে। কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে হতাশ হচ্ছি। বাজারে শসার দাম না থাকায় পুরো বাগানটি আরেক কৃষকের কাছে ২৭হাজার টাকা বিক্রি করে দেয়। শসা লাগানো থেকে পরিচর্যা সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০হাজার টাকা। লোকসান হলো ২২ হাজার টাকা।
সদরের মোহাম্মদপুর এলাকার আরেক চাষি নাজিম উদ্দিন বলেন, চার বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছি। হাটে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। পরে ২ টাকা দরে এক পরিচিত পাইকারের কাছে কিছু বিক্রি করেছি। তাতে লোকসানের মধ্যে থাকতে হবে।
আরেক কৃষক সিদ্দিকুল জানান, তিনিও খরচ তুলতে কয়েকমণ শসা হাটে নিয়ে এসে বিপদে পড়েন। দুই টাকা দরেও বিক্রি করতে পারেননি। এবার শসা চাষ করে তিনিও হতাশ হয়েছেন। এজন্য শসা তুলে ফেলে দিয়ে তিনি ওই জমিতেই অন্য শাকসবজি চাষ করবেন।
নেন্দলা রায় ও মানিক চন্দ্র রায় নামে দুই কৃষক বলেন,শুরুর দিকে আশানুরুপ দাম পেলেও শসার বাজারমূল্যে দ্রুত ধস নেমেছে। শুরুর দিকে ২ হাজার টাকা মণ থাকলেও এখন ১০০ টাকা মণ দরে শসা। বিক্রি হচ্ছে।
রফিকুল, জব্বার আলীসহ কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ী জানান, বাজারে যেমন চাহিদা রয়েছে সে হিসেবে তাঁরা শসা কিনছেন। তাঁদের সামান্য দামে শসা বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে কৃষকদের লোকসান হলেও করার কিছুই নেই বলে জানান এই ব্যবসায়ীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে এ বছর শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভাল হওয়ায় হাট-বাজারে আমদানিও বেশি। তাই দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। এতে দাম কম হওয়ায় লাভ কম হচ্ছে কৃষকদের।
মেসেঞ্জার/সজিব