ছবি : মেসেঞ্জার
বৈশাখী উৎসব বাংলা সংস্কৃতি ও বাঙালির অস্তিত্বের এক ধারক বাহক। নতুন বছরে নতুন ধানের পিঠাপুলি-ফিরনি, পায়েশ না হলে বাঙালির নবান্নের আমেজ যেন ঠিক জমে উঠে না। প্রবাসে স্বজনহীন কর্মব্যস্ততার মাঝে বৈশাখের বিনোদনের কথা চিন্তাই করা যায় না।
মরুর এই দেশে রমনার বটমূলে বাউলের একতারার সুর আর পান্তা-ইলিশের উৎসব না থাকলেও, বাঙালির বৈশাখী আমেজ সবসময় তাদের হৃদয়ে বহমান।
রমনার বটমূল না হলেও শনিবার (২৭ এপ্রিল) আবুধাবি শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবি।
দিনব্যাপী বৈশাখী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় পিঠা পুলি, পান্তা ইলিশ, দেশীয় খাবার, বই, হস্তশিল্প ও জুয়েলারি মিলে প্রায় ১৫টি স্টল স্থান পায়।
এছাড়া লাল-সবুজের পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, জনতা ব্যাংকের পাশাপাশি এতে অংশ নেয় বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউস। বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণে তারা প্রবাসীদের উৎসাহিত করে।
বৈশাখী এই আয়োজনে ছিলো প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীদের পরিবেশনায় সংগীত, পুতুল নৃত্য, গ্রাম বাংলার বিয়ে অনুষ্ঠানে বর-কনে সাজে ছোট ছোট শিল্পীদের নৃত্য ও গান পরিবেশন ছিল চমৎকার উপহার। এছাড়া অন্যান্য শিল্পীদের দেশাত্মবোধক গান আর মনমাতানো নৃত্য পরিবেশন ছিল দর্শকদের মনকাড়া আয়োজন।
হলভর্তি দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালি ও অভিনন্দনে হয়ে ওঠে এক আনন্দঘন পরিবেশ। মুখরিত হয়ে ওঠে শিল্পীরাও। মনোমুগ্ধকর এই আয়োজন নজর কাড়ে সবার। বৈশাখী মেলা পরিণত হয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মহা মিলনমেলায়।
আবুধাবি মহিলা সমিতির সভাপতি সালমা আহমেদ বলেন, আমাদের একটাই উদ্দেশ্য থাকে, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে নতুন প্রজেন্মর কাছে তুলে ধরা। বিদেশে থাকা সত্ত্বেও বৈশাখে এই সমস্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে স্বাদ-সংস্কৃতি, পোশাক-আশাক সবকিছুর আমরা অনুভব করতে পারি। সেজন্য এই আয়োজন। যেভাবে সবাই বৈশাখী সাজে সেজেছেন আর খাবারের পসরা সাজিয়েছেন তাতে আয়োজনের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। তিনি বলেন, এমন অনুষ্ঠানে দেশীয় সাংস্কৃতিসহ নানা আয়োজন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, তাই প্রতিবছর এমন আয়োজন আমরা করে থাকি। প্রবাস প্রজন্মকে বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ইতিহাসের শেকড়ে আবদ্ধ রাখার জন্যই এই আয়োজন।
বৈশাখী এই আয়োজন প্রবাসীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মেলা প্রাঙ্গণ পরিণত হয় বাঙালিদের মিলনমেলায়। বিদেশের মাটিতে দেশী পণ্যর কেনার আনন্দ, বাহারি রকমের পিঠা ও খাবার খেয়ে উৎফুল্ল তারা।
প্রবাসীরা বিদেশের মাটিতে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে এবং তাদের সন্তানদের নিয়মিত বাংলা সংস্কৃতি চর্চায় আগ্রহী করতে নিয়মিতই চান এমন আয়োজন।
মেসেঞ্জার/আশরাফুল/আপেল